উদ্ধারকাজ চলছে। ছবি: পিটিআই।
ছ’দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও উদ্ধার করা যায়নি উত্তরাখণ্ডের উত্তরাকাশীর নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪০ জন শ্রমিককে। তাঁদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য সুড়ঙ্গের বাইরে থেকে জল, খাবার এবং অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কী ভাবে এই শ্রমিকদের উদ্ধার করা যায়, তা নিয়ে নানা পরিকল্পনা চলছে। আটকে থাকা শ্রমিকদের যাতে কোনও রকম ক্ষতি না হয়, সে দিকে খেয়াল রেখে পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
৪০ জনের সেই দলে রয়েছেন রাজ্যের চম্পাবত জেলার ছানি গোথ গ্রামের বছর পঁচিশের যুবক পুষ্কর। তাঁরা দুই ভাই। দাদা বিক্রমও নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা। পুষ্কর এবং বিক্রম দুই ভাই নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে নির্মাণের কাজ করছিলেন পুষ্কর-সহ ৪০ জন শ্রমিকের একটি দল। গত ১২ নভেম্বর (রবিবার) সুড়ঙ্গের একাংশ ভেঙে পড়ে। আর ভিতরে আটকে পড়েন ৪০ জন শ্রমিক।
তার পর কেটে গিয়েছে ছ’দিন। পুষ্করের দাদা বিক্রম জানান, সুড়ঙ্গ ভেঙে পড়ার খবর পেয়েই বাবা-মাকে কিছু না জানিয়েই উত্তরকাশীতে ঘটনাস্থলে হাজির হন। এক সংবাদমাধ্যমকে বিক্রম বলেন, “ঘটনার ছ’দিনের মাথায় অর্থাৎ শুক্রবার ভাইয়ের সঙ্গে কয়েক মুহূর্তের জন্য যোগাযোগ করতে পেরেছিলাম। ওর গলা শুনে মনে হচ্ছিল খুব ক্লান্ত, আতঙ্কিত। কিন্তু আমাকে বার বার অভয় দিয়ে বলেছে, সে ঠিক আছে, চিন্তার কোনও কারণ নেই। তার সঙ্গে আরও অনেকে আছে।”
বিক্রম জানান, কয়েক সেকেন্ডের ওই কথাবার্তার মধ্যেই ভাইয়ের শারীরিক অবস্থা নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। উদ্ধারের কাজ যে জোরকদমে চলছে, সেটাও জানিয়েছেন। বিক্রম বলেন, “আমার গলা শুনেই পুষ্কর বলেছিল, দাদা, আমি যে সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছি মাকে বলিস না। চিন্তা করবে।” তাঁর কথায়, “বাড়ির খুব আদরের পুষ্কর। মায়ের চোখের মণি। তাই মাকে এই খবর না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল ভাই।” কিন্তু পুষ্করের আটকে থাকার কথা গোপন করে রাখা যায়নি। গ্রামবাসীদের অনেকেই বিষয়টি জেনে ফেলায় বাবা-মায়ের কানেও সে খবর পৌঁছেছে বলে জানান বিক্রম।