প্রতীকী ছবি
কোভিড কেয়ার সেন্টারের অব্যবস্থার করুণ চিত্র উঠে এল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানকার নোংরা পরিস্থিতির কথা মেনে নিয়েছে প্রশাসনও।
আগরতলার ভগৎ সিংহ যুব আবাস কোভিড কেয়ার সেন্টারের নোংরা পরিবেশের ছবিটি ফেসবুক লাইভে তুলে ধরেছেন এক গর্ভবতী মহিলা। করোনা আক্রান্ত ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলা ওই অব্যবস্থায় নিজেকে ‘চরম অসুরক্ষিত’ বলে মনে করছেন। বিশেষ করে গর্ভস্থ সন্তানের জন্য তিনি চিন্তায় রীতিমত কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছে লাইভ ভিডিয়োয়। প্রশাসনের কাছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কোভিড কেয়ার সেন্টারের দাবি জানিয়েছেন এই মহিলা। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের এক পদস্থ আধিকারিক। তাঁর বক্তব্য, এই কাজে নিযুক্ত সাফাই কর্মীদের গাফিলতির কারণে এই পরিস্থিতি। তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। প্রশ্ন উঠছে অতিমারির মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কোভিড কেয়ার সেন্টারের নজরদারির দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক কর্তারাও কি অব্যবস্থা, অপরিচ্ছন্নতার দায় এড়িয়ে যেতে পারেন?
শুক্রবার ওই গর্ভবতী মহিলা অসুস্থ অনুভব করায় তাকে আইজিএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ভর্তি করার সময়ে তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়৷ রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তাই তাকে ভগৎ সিংহ যুব আবাস কোভিড কেয়ার সেন্টারে ভর্তির জন্য পাঠানো হয়েছিল। মহিলা ফেসবুক লাইভে অভিযোগ করেন, অসুস্থতা সত্বেও তাঁকে ৪ ঘণ্টা সেন্টারেরর বাইরে অ্যাম্বুলেন্সে বসে থাকতে হয়েছে। সেন্টারের বিভিন্ন অংশ ক্যামেরাবন্দি করে তিনি বলেন, “কোভিড কেয়ার সেন্টারটি কার্যত নরকে পরিণত হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের এই নোংরা পরিবেশে থাকতে হচ্ছে। প্রশাসন অবিলম্বে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ফিরিয়ে আনুক।”
“সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মহিলার এমন পরিবেশে থাকা শুধু কষ্টকর নয় কতটা ঝুঁকিপূর্ণ,” বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। মহিলার করুণ অবস্থা দেখে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠছে। যদিও পরে মহিলা জানিয়েছেন, লাইভ ভিডিয়োয় তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্য সরকার তাঁকে জিবি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেছে।
কিন্তু বাকি যাঁরা ওই পরিস্থিতিতে রয়ে গেলেন তাঁদের কী হবে?
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তা বলেন, “ভগৎ সিংহ কোভিড কেয়ার সেন্টারের ওই অভিযোগ প্রশাসনের নজরে এসেছে। শীঘ্রই প্রশাসনিক ভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।” তিনি স্বীকার করে নেন, ওই সেন্টার নিয়ে ইতিপূর্বেও একাধিক বার অভিযোগ উঠেছে। নোংরা পরিবেশের সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, “সাফাই কর্মীরা দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। সেন্টারের সমস্ত নোংরা ও আবর্জনা তাঁদের পরিষ্কার করা উচিত ছিল।”
আজ সকালে বিজেপির বিধায়ক তথা প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মণ পিপিই কিট পরে সেন্টারটির দুরবস্থা দেখতে যান। তার পর তিনি মন্তব্য করেন, গত কাল ওই মহিলার আর্তনাদ দেখে তিনি মর্মাহত। আজ সেখানে গিয়ে সবাইকে ফল ও কিছু খাবার দিয়ে এসেছেন।