—প্রতীকী চিত্র।
সম্পর্কে আপত্তি করায় প্রেমিকের সঙ্গে চক্রান্ত করে মা-কেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক তরুণীর বিরুদ্ধে। এমনকি, খুনের পর মৃতদেহ ফেলে রেখে ওই বাড়িতেই প্রেমিকের সঙ্গে তিন রাত কাটানোর অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। আপাতত পুলিশ ওই যুগলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ময়নাতদন্ত এবং ফরেনসিক পরীক্ষার পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি হায়দরাবাদের হায়াতনগরে এই ঘটনা ঘটেছে। সেখানকার পুলিশ ইন্সপেক্টর সতীশ জানিয়েছেন, গত ২৫ অক্টোবর রামান্নাপেটের কাছে রেললাইন থেকে এক মহিলার পচা-গলা দেহ উদ্ধার হয়। তার এক সপ্তাহ আগে থেকেই হায়াতনগরের বাসিন্দা রজিতা নিখোঁজ হয়ে যান।
উদ্ধার হওয়া মৃতদেহটি রজিতার বলেই সন্দেহ হয় পুলিশের। তা নিয়ে রজিতার মেয়ে, কলেজ পড়ুযা কীর্তি রেড্ডিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাতেই তাঁর বয়ানে ধরা পড়ে বিস্তর অসঙ্গতি। চাপের মুখে পড়ে শেষমেশ মাকে খুনের কথা মেনে নেন তরুণী। পুলিশের দাবি, কীর্তি স্বীকার করেছেন, প্রেমিক শশীর সঙ্গে মিলে শ্বাসরোধ করে মাকে খুন করেছিলেন দু’জন। তার পর তিন দিন ধরে মৃতদেহ বাড়িতেই রেখে দিয়েছিলেন। পরে দেহটি লোপাট করে দেন।
আরও পড়ুন: কাজ নেই, এক মাসে অন্ধ্রে আত্মঘাতী ৩ নির্মাণ শ্রমিক, ভিডিয়ো সামনে আসতেই তোলপাড়
অন্য দিকে, রেললাইন থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহ আদৌ রজিতার কিনা, সে ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয় হায়াতনগরের পুলিশ। কারণ, কোথায় মৃতদেহ ফেলে রেখে এসেছিল, সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি কীর্তি। তবে তদন্তকারীদের অনুমান, মৃতদেহ বাড়ি থেকে সরানোর পর কীর্তি সঙ্গে নাও থাকতে পারেন। তাঁর প্রেমিক শশী একাই সেই কাজ করেছিলেন। তাই কীর্তি সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি। অন্য দিকে, রজিতার প্রেমিক শশীও এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে স্পষ্ট হওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। শুরু হয়েছে ফরেনসিক পরীক্ষাও। সেই রিপোর্ট হাতে এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, কীর্তির বাবা পেশায় ট্রাক চালক। কাজের তাগিদে অধিকাংশ সময় বাইরেই থাকতে হয় তাঁকে। সম্প্রতি বাড়ি ফিরে স্ত্রীর দেখা পাননি তিনি। তা নিয়ে প্রশ্ন করলে আজগুবি যুক্তি দেন কীর্তি। এমনকি, ঘটনার সময় তিনি বিশাখাপত্তনমে ছিলেন বলেও দাবি করেন। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ জাগায় মেয়েকে নিয়েই থানায় যান । মোবাইলের কল রেকর্ডস খতিয়ে দেখে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, ঘটনার সময় আদৌ বিশাখাপত্তনমে ছিলেন না কীর্তি।
আরও পড়ুন: ঠোঁটে জ্বলা সিগারেট দিয়েই রকেট ফাটাচ্ছেন এই ব্যক্তি! ভিডিয়ো ভাইরাল
কিন্তু তার পরেও অপরাধ স্বীকার করেননি কীর্তি। বরং বাবা মারধর করায় মা আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন বলে পাল্টা যুক্তি দেন তিনি। পরে চেপে ধরলে অপরাধ স্বীকার করে নেন।
কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী কীর্তি। বাড়ির একমাত্র মেয়ে তিনি। কিন্তু মাকে খুনের অভিযোগ ওঠায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।