রাহুল গান্ধী। —ফাইল ছবি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামিকালই মুম্বই রওনা হচ্ছেন। শুক্রবার শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর পুত্র অনন্ত অম্বানীর বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। বিজেপি তথা এনডিএ তো বটেই, বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া-র বিভিন্ন দলের নেতাদেরও এই বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাহুল গান্ধী কি মুম্বইতে অম্বানী-পুত্রের বিয়ের এই অনুষ্ঠান এড়িয়ে যাবেন? দিল্লির রাজনৈতিক শিবিরে এখন এই প্রশ্ন ঘিরেই তুমুল চর্চা চলছে। কারণ রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কর্ণধার মুকেশ অম্বানী নিজে গত সপ্তাহে দিল্লিতে সনিয়া গান্ধীর দশ জনপথের বাসভবনে গিয়ে গান্ধী পরিবারকে নিমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছিলেন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে, রাহুল মহারাষ্ট্রে যাবেন। তবে বিয়ের অনুষ্ঠানের পরে। মমতা ১২ জুলাই বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ১৩ জুলাই কলকাতা ফিরবেন। এই সফরে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে শরদ পওয়ার ও উদ্ধব ঠাকরের আলাদা বৈঠক হতে পারে। রাহুলের ১৪ জুলাই মহারাষ্ট্রে যাওয়ার কথা। তিনি সোলাপুরের পান্ঢারপুরে বিঠ্ঠল দেবের মন্দিরের তীর্থযাত্রায় অংশ নেবেন। প্রতি বছর এখানে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী পায়ে হেঁটে আষাঢ়ী একাদশীতে পুজো দিতে যান। সংসদের অধিবেশনের সময়ে শরদ পওয়ারের নেতৃত্বে মহারাষ্ট্রের মহা বিকাশ আঘাড়ী জোটের নেতারা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুলের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে এই তীর্থযাত্রায় অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
চলতি বছরের শেষে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচন। লোকসভা ভোটে কংগ্রেস, শরদ পওয়ারের এনসিপি ও উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনাকে নিয়ে মহা বিকাশ আঘাড়ী জোট ভাল ফল করেছে। তাই রাহুলের মহারাষ্ট্র সফর থেকেই ভোটের প্রচারের ঢাকে কাঠি ফেলে দিতে চাইছেন পওয়ার-উদ্ধবেরা। মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি বিধানসভা কেন্দ্রে কোন দল, কত আসনে লড়বে, বিরোধী জোট তা-ও দ্রুত চূড়ান্ত করে ফেলতে চাইছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, কংগ্রেস ১২০টির মতো আসনে লড়বে। উদ্ধবের শিবসেনা ৯০টির কাছাকাছি আসনে লড়বে। শরদ পওয়ারের এনসিপি ৮০টির মতো আসনে লড়বে।
মহারাষ্ট্রে দু’দিন পরে গেলেও অম্বানীদের নিমন্ত্রণ রাহুল পুরোপুরি এড়িয়ে যাবেন কি না, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, রাহুল লোকসভার প্রথম অধিবেশনের বক্তৃতাতেও অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠায় স্থানীয় মানুষকে বাদ দিয়ে আদানি-অম্বানীদের আমন্ত্রণ করা হয়েছিল বলে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। কংগ্রেসের অনেক নেতারই অবশ্য নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে মুকেশ অম্বানীকে একই বন্ধনীতে ফেলে নিশানা করায় আপত্তি রয়েছে। এখন মহারাষ্ট্রের ভোটের আগে গান্ধী পরিবার অম্বানীদের নিমন্ত্রণ পুরোপুরি এড়িয়ে যাবে কি না, সে দিকে কংগ্রেস নেতাদেরও চোখ থাকছে।