কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহত কর্নেল মনপ্রীত সিংহ। —ফাইল চিত্র ।
কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় জঙ্গিদের চালানো গুলিতে নিহত হয়েছেন কর্নেল মনপ্রীত সিংহ। কিন্তু বুধবার রাত পর্যন্ত তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি স্ত্রী জগমিত কৌরকে। তিনি তখনও জানতেন, স্বামী আহত। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়েই তাঁকে ফোন করবেন। ছুটিতে ফিরবেন বাড়িতে। বাবা আর নেই বলে তখনও জানত না মনপ্রীতের ছ’বছরের পুত্র।
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-র সঙ্গে কথা বলার সময়, মনপ্রীতের ভাই বীরেন্দ্র গিল জানিয়েছেন, মনপ্রীতের স্ত্রী তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে বুধবার রাত পর্যন্ত অবগত ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমি বুধবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমাকে বলেছিল যে, ও ব্যস্ত আছে। সন্ধ্যার পরে অভিযান শেষ হলে আমাকে ফোন করবে। এর পর বিকেলে আমরা খবর পাই যে ও আহত হয়েছে। তার পর খবর পেলাম সব শেষ।’’
কিন্তু সেই খবর দেওয়া হয়নি জগমিতকে। বর্তমানে চণ্ডীগড়ে বাপের বাড়িতে ছ’বছরের পুত্র এবং দু’বছরের কন্যাসন্তানকে নিয়ে থাকছেন পেশায় শিক্ষক জগমিত। তাঁকে জানানো হয়েছে যে তাঁর স্বামী আহত, কিন্তু ভয়ের কিছু নেই। এখনও এক বুক আশা নিয়ে স্বামীর ফোনের অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। মনপ্রীতের দেহ চণ্ডীগড়ে আনা হচ্ছে। সেখানেই বৃহস্পতিবার তাঁকে দাহ করা হবে।
বুধবার দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় মনপ্রীতের। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, অনন্তনাগের গাড়োল এলাকায় কয়েক জন জঙ্গি লুকিয়ে ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতেই তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। বুধবার সকাল থেকে ওই জঙ্গিদের সঙ্গেই নিরাপত্তারক্ষীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। চলতে থাকে অবিরত গুলির লড়াই। কোকারনাগ এলাকায় কর্নেল সিংহ ১৯ রাষ্ট্রীয় রাইফেল্স ইউনিটকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তাঁর উপর নির্বিচারে গুলি চালায় জঙ্গিরা। ঝাঁঝরা হয়ে যায় কর্নেলের দেহ। মনপ্রীত ছাড়াও মেজর আশিস ডোনচাক এবং ডিএসপি হুমায়ুন মুজামিলের মৃত্যু হয়েছে জঙ্গি হামলায়।
এই তিন হত্যার দায় স্বীকার করেছে রেজিসট্যান্ট ফ্রন্ট নামের একটি জঙ্গিগোষ্ঠী। তারা লস্কর-ই-তইবার একটি অংশ। জঙ্গিদের খোঁজে এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।