প্রতীকী ছবি।
রোমহর্ষক খুন হয়েছিল ২০১১ সালে। পলিগ্রাফ টেস্ট করেও সমাধান হয়নি। শেষ পর্যন্ত ৯ বছর পর সেই খুনের কিনারা করল পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছে নিহতের স্ত্রীর প্রেমিক এবং এক ক্যাব চালক। স্ত্রীকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই খুন বলে তদন্তে এক প্রকার নিশ্চিত পুলিশ। ওই ক্যাব চালককে খুনে সাহায্য করার জন্য ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল বলেও জানতে পেরেছেন দিল্লি পুলিশের গোয়েন্দারা।
২০১১ সালে একটি খুনের ঘটনা ঘিরে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায়। বিয়ের কিছু দিন পর হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান দিল্লির যুবক রবি। কয়েক দিন পর রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু মাংসপিণ্ড উদ্ধার হয়। সেই সময় মনে করা হয়েছিল, ওই যুবককেই খুনের পর দেহ টুকরো করে অলওয়ার থেকে ওয়ারি পর্যন্ত রাস্তায় গাড়িতে যাওয়ার সময় ফেলতে ফেলতে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু তদন্তে নেমে কার্যত কোনও সূত্রই পাচ্ছিল না পুলিশ। তবে সন্দেহ ছিল স্ত্রী শকুন্তলা, তাঁর প্রেমিক কমল এবং এক ক্যাব চালকের উপর। এমনকি, ২০১২ সালে পলিগ্রাফ টেস্টের পরেও খুনের কিনারা হয়নি।
তবে জট খোলে ২০১৭ সালে। ওই সময় সন্দেহের তালিকায় থাকা তিন জনেরই ব্রেন ম্যাপিং টেস্ট হয় এবং তাতেই কমল ও ক্যাব চালক দু’জনেই খুনের কথা স্বীকার করে। কিন্তু তার পর থেকেই তিন জন ফেরার ছিলেন। অবশেষে রাজস্থানের অলওয়ার থেকে কমলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ধরা পড়ে ক্যাব চালকও। এর মধ্যে রবির স্ত্রী শকুন্তলা আবার বিয়ে করেছেন। বর্তমানে তিনি সন্তানসম্ভবা এবং ফেরার। পুলিশ তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: গণপিটুনি পাশ্চাত্যের সংস্কৃতি, ভারতকে কলুষিত করবেন না, বললেন আরএসএস প্রধান
আরও পডু়ন: উইঘুর মুসলিমদের উপর নজরদারি! চিনের ২৮ সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করল আমেরিকা
এই ব্রেন ম্যাপিং টেস্টেই খুনের ঘটনার বিবরণ জানতে পারে পুলিশ। ধৃতদের বয়ান অনুযায়ী, কমলের সঙ্গে শকুন্তলার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার মধ্যেই রবির সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় শকুন্তলার। কিন্তু বিয়ের পরেও কমলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল কমলের। তার পর কমলই খুনের পরিকল্পনা করে।
ধৃতরা জানান, খুনের দিন শকুন্তলা তাঁর বোনের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানের নাম করে স্বামী রবির সঙ্গে বাড়ি থেকে বার হন। মাঝপথে ডেকে নেন কমলকে। ক্যাব চালকের সঙ্গেও আগে থেকেই সব ঠিক করা ছিল। তার পর রাস্তায় তিন জন মিলে রবিকে খুন করেন। খুনের পর প্রথমে একটি নির্মীয়মাণ এলাকায় দেহ পুঁতে দেন। পরে সেখান থেকে পচাগলা দেহের অংশ তুলে খণ্ড খণ্ড করে গাড়িতে যাওয়ার সময় রাস্তায় ফেলতে ফেলতে যান।
ব্রেন ম্যাপিং টেস্টে খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করার পর যেখানে প্রথমে দেহ পোঁতা হয়েছিল, সেখান থেকে ২৫টি হাড় উদ্ধার করে পুলিশ।