মদ-নীতিতে চাপে দিল্লি সরকার। — ফাইল চিত্র।
সোমবার হাজিরা দিতে হবে সিবিআই দফতরে। দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়াকে এমনই সমন পাঠানো হয়েছে। আর তার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আম আদমি পার্টি। দলের নেতা সৌরভ ভরদ্বাজের দাবি, আসন্ন গুজরাত ভোটের কথা ভেবেই সিসৌদিয়াকে গ্রেফতার করার ছক কষেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আপের অভিযোগের তির বিজেপি তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের দিকে। তাঁর কটাক্ষ, আপের ভয়ে কাঁপছে বিজেপি!
আবগারি মামলায় গত মাসেই সিসৌদিয়ার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিজয় নায়ারকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সিসৌদিয়ার বাড়িতে তল্লাশিও চালানো হয়েছে। যদিও শুরু থেকেই আপ দাবি করে এসেছে, আবগারি কেলেঙ্কারি বলে যে ঘটনা নিয়ে ‘গুজব’ ছড়াচ্ছে বিজেপি, তাতে আসলে কোনও দুর্নীতিই হয়নি। কিন্তু কী এমন রয়েছে দিল্লি সরকারের আবগারি নীতিতে? কেন এত বিতর্ক!
২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর নতুন আবগারি নীতি আনে দিল্লি সরকার। মদ কেনার পাশাপাশি বিক্রির পদ্ধতিতেও বেশ কিছু বদল আনা হয়। নতুন আবগারি নীতিতে সরকারি মদের দোকানগুলি বন্ধ করে বেসরকারি মদের দোকানগুলিকে মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়। কেজরীওয়াল সরকার চেয়েছিল, নতুন করে ৮৪৯টি মদের দোকান খোলা হবে। রাজধানীর ৩২টি অঞ্চলে এই মদের দোকান খোলার পরিকল্পনা ছিল।
দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া আবগারি দফতরের দায়িত্বে। নতুন আবগারি নীতিতে মদের কালোবাজারি বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে দাবি করেছিল সরকার। আগে দিল্লির মোট ৮৬৪টি মদের দোকান ছিল। চারটি সরকারি সংস্থা ৪৭৫টি মদের দোকান চালাত। বাকি ৩৮৯টি সংস্থার বেসরকারি মালিকদের হাতে ছিল।
এই নীতি কার্যকর করতে আবগারি লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে বেনিয়ম এমনকি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ফলে নতুন আবগারি নীতি চালুর ঠিক ৮ মাস পর তা প্রত্যাহার করা হয়। বলা হয়, নতুন নীতিতে পদ্ধতিগত কিছু সমস্যা রয়েছে। নতুন ৬৪৪টি মদের দোকান খোলা হলেও শেষমেশ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে না পেরে লাইসেন্স ফিরিয়ে দিতে শুরু করেন। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সরকার পুরনো আবগারি নীততে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারে প্রতিনিধি তথা লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয়কুমার সাক্সেনা সরকারের এই নতুন নীতিতে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই সংক্রান্ত মামলারই তদন্ত করছে সিবিআই।