১৯৮৮ সাল থেকে শুরু হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের কালীপুজো। দলের জেলা কমিটি পুজোর দায়িত্বে। দিন দিন বেড়েছে সেই পুজোর জাঁকজমক। এ বার সেই পুজো পা দিল ৩৫তম বছরে।
ওই কালীপুজোর রাশ অনুব্রতরই হাতে। তাঁর উদ্যোগেই হয়ে আসছে ওই পুজো। কিন্তু গরু পাচার মামলায় এ বার তিনি রয়েছেন জেলে।
এ বার তৃণমূলের বীরভূম জেলা কমিটির ১৫০ জন সদস্যের থেকে চাঁদা তুলে পুজোর আয়োজন। ঘোষণা করেছে দলীয় নেতৃত্বই। প্রত্যেকে এক হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে মোট দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে হবে পুজো।
বরাবরই জাঁকজমক করে হয় ওই কালীপুজো। ২০১৮ সালে কেষ্টর কালী প্রতিমা সাজানো হয়েছিল ১৮০ ভরি সোনার গয়নায়। ২০১৯ সালে গয়নার পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ২৬০ ভরি।
২০২০ সালে সেই প্রতিমা সাজানো হয়েছিল প্রায় ৩০০ ভরি গয়না দিয়ে। ২০২১ সালে প্রতিমার সাজসজ্জা হয়েছিল ৫৭০ ভরি সোনার গয়নায়।
কালী প্রতিমা সাজানোর জন্য রয়েছে নানা রকমের আকর্ষণীয় গয়না। বীরভূম তৃণমূল সূত্রে খবর, কালী প্রতিমার জন্য রয়েছে সোনার মুকুট।
রয়েছে নানা রকমের হার। এ ছাড়া, সীতাহার, চেন, গলার চিক, টায়রা-টিকলিও রয়েছে প্রতিমা সাজানোর জন্য।
সাজসজ্জার জন্য রয়েছে চূড়, রতনচূড়, মান্তাসা এবং বেশ কয়েকটি আংটিও।
রয়েছে, বালা, বাউটি, বাজুবন্ধ ইত্যাদিও। কালীপুজোর সময় ওই সব গয়না বার করে সাজানো হয় প্রতিমাকে।
প্রতি বার নিজের হাতে সোনার গয়নায় প্রতিমাকে সাজান কেষ্ট। তবে এখনও পর্যন্ত দু’বার এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটেছে। ২০১৯ এবং ২০২০ সালে প্রতিমাকে সাজাতে পারেননি অনুব্রত। ২০১৯ সালে মৃত্যু হয়েছিল কেষ্টর মায়ের। ২০২০ সালে মারা যান তাঁর স্ত্রী।
সব মিলিয়ে রয়েছে ৫৭০ ভরি সোনার গয়না। যার দাম বেশ কয়েক কোটি টাকা। গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত। এই আবহে ওই গয়না কোথা থেকে এল, সে দিকে নজর রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-রও।
গত কয়েক বছরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে অলঙ্কারের পরিমাণ। এ বছর অবশ্য গয়নার পরিমাণ আর বাড়বে না বলেই বীরভূম জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ বারও কালীপুজোয় উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ কেষ্টর। কারণ, আগামী ২৪ অক্টোবর কালীপুজো। অথচ বিশেষ সিবিআই আদালতে কেষ্টকে হাজির করানোর কথা ২৯ অক্টোবর।
প্রতি বারই উপস্থিত থেকে পুজোর যাবতীয় আয়োজন সেরেছেন অনুব্রত। কিন্তু এ বার তিনি জেলবন্দি থাকায় হয়তো সেই নিয়মের তার ব্যতিক্রম ঘটতে চলেছে।
তৃণমূলের বীরভূম জেলার সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে এ বছর জেলা কমিটির নেতারাই গয়নায় সাজিয়ে দেবেন প্রতিমাকে। তবে কে গয়না পরাবেন, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
পুজোর সময় প্রিয় ‘কেষ্টদা’র জন্য মায়ের আশীর্বাদ চাওয়া হবে। এমনটাই জানিয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতৃত্ব।