ছবি পিটিআই।
বরাদ্দের অঙ্ক তুলে ধরে কেন্দ্র যতই উন্নয়নমুখী প্রকল্পের কথা বলুক, জম্মু-কাশ্মীরের বাজেট নিয়ে আলোচনা তো হওয়ার কথা ছিল সেখানকার বিধানসভায়। রাতারাতি বিশেষ মর্যাদা লোপের সিদ্ধান্তের খেসারত হিসেবেই আজ তা সংসদে করতে হচ্ছে না কি? জম্মু-কাশ্মীরের বাজেট চর্চায় আজ লোকসভায় এই প্রশ্ন বার বার তুললেন বিরোধীরা।
বিরোধীদের দাবি, গত সাত মাস জম্মু-কাশ্মীর কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে থাকায় মাসুল দিতে হচ্ছে জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখের অর্থনীতিকে। মুখ থুবড়ে পড়েছে পর্যটন। কোমর ভেঙে গিয়েছে স্থানীয় ব্যবসারও।
উত্তরে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের পাল্টা পরিসংখ্যান, এর আগেও ১৯৯১, ১৯৯২, ১৯৯৩, ১৯৯৪, ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে জম্মু-কাশ্মীরের বাজেট পেশ এবং পর্যালোচনা হয়েছিল এই সংসদেই। তা-ও আবার ওই এলাকা রাজ্য থাকাকালীন। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে সেখানে ‘নরসংহার’ হয়েছিল বলেও তাঁর দাবি। সেই হিংসার শিকার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘরে ফেরাতে বরং কোমর বেঁধে নেমেছে মোদী সরকারই। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির পাল্টা প্রশ্ন ছিল, ওই ‘নরসংহারের’ সময়ে কেন্দ্রে ভি পি সিংহের যে সরকার ছিল, তাতে তো সমর্থন ছিল বিজেপিরও। যার উত্তরে নির্মলার যুক্তি, ১৯৯১ সালে নরসিংহ রাওয়ের হাত ধরে কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফেরার পরেও পণ্ডিতদের পুনর্বাসনের জন্য কিছু করেনি। বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে জম্মু-কাশ্মীরের অর্থনীতি কী ভাবে ‘দৌড়চ্ছে’, এ দিন আলোচনায় তার নমুনা পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়ায় দেশের বাণিজ্যও যে মার খেয়েছে, তা তিনি মানছেন। কিন্তু তার মধ্যেও বেড়েছে জম্মু-কাশ্মীরের রফতানি।
কিন্তু সেই যুক্তি তেমন সন্তুষ্ট করতে পারেনি বিরোধীদের। এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে জানতে চেয়েছেন, বিশেষ মর্যাদা লোপের সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দু’মাসের মধ্যে শ্রীনগরে শিল্প সম্মেলন করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, সাত মাসে তা করা গেল না কেন? ন্যাশনাল কনফারেন্সের হাসনেন মাসুদি বলেছেন, ‘‘ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞা থাকায় উপত্যকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে পর্যটন। সরকার ডাল লেক পরিষ্কারের কথা বলছে। অথচ পর্যটকের অভাবে খাঁ খাঁ করছে খালি শিকারা, হোটেল।’’