প্রতীকী ছবি।
ট্রাকের পিছনে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ বা ‘হর্ন প্লিজ’ এই লেখাটা দেখেননি, এমন ব্যক্তি খুব কমই আছে। কোনও ট্রাকের পিছনে থাকা গাড়ি ওভারটেক করতে চাইলে হর্ন দেয়। ট্রাকের পিছনে থাকা গাড়িচালককে বার্তা দেওয়ার জন্য এবং তাঁকে সতর্ক করতেই মূলত এটি লেখা হয়ে থাকে।
কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যায় এ ক্ষেত্রে। ট্রাকের পিছনে থাকা অন্য গাড়িচালককে বার্তা দেওয়া জন্য তো শুধু ‘হর্ন প্লিজ’ কথাটাই যথেষ্ট। তা হলে এই দুই শব্দের মাঝে ‘ওকে’ কথাটা কেন জুড়ে দেওয়া হয়? হয়তো ভাবতে পারেন, ওটা এমনিই লেখা হয়। কিন্তু না। আমাদের এই ধারণা ভুল। এই ‘ওকে’ কথাটি মাঝখানে জুড়ে দেওয়ারও কয়েকটি দীর্ঘ প্রচলিত অর্থ আছে। যদিও সেই অর্থে এখন ‘ওকে’ কথাটা ব্যবহৃত হয় না।
এখন একাধিক লেনের রাস্তা দেখা যায় বিশ্ব জুড়ে। চার, পাঁচ এমনকি ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়ে রয়েছে। ফলে একাধিক গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারে। কিন্তু আগে একাধিক লেনবিশিষ্ট রাস্তা খুবই কম ছিল। একটি রাস্তা দিয়েই যাওয়া এবং আসা দু’টিই হত। ফলে কোনও ট্রাকের পিছনে থাকা গাড়ি ওভারটেক করতে চাইলে উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা থাকত। যেহেতু ট্রাকের আকার বড়, তাই পিছনে কোনও ছোট গাড়ি থাকলে উল্টো দিক থেকে আসা গাড়িকে দেখা সম্ভব হত না চালকের। তাই ‘ওকে’ শব্দের ‘ও’-এর মধ্যে একটা সাদা লাইট লাগানো হত। যদি ট্রাকের পিছনে থাকা কোনও গাড়ি ওভারটেক করতে চাইত, সামনের রাস্তা ফাঁকা থাকলে ‘ও’-এ থাকা আলো জ্বালিয়ে পিছনে থাকা গাড়িটিকে ওভারটেক করার সঙ্কেত দিতেন ট্রাকচালক।
তবে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ কথাটির সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েরও একটা সম্পর্ক আছে। প্রচলিত যে, ওই সময় ডিজেলের সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে ট্রাক চালানো হত। জ্বালানির খরচ কমাতে নাকি এই কাজ করা হত। ডিজেলের তুলনায় কেরোসিন বেশি জ্বলনশীল বলে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ লেখা হত। অর্থাৎ এখানে ‘ওকে’ বলতে ‘অন কেরোসিন’ বোঝানো হত। আর তাতেই বাকি গাড়িচালকরা বুঝে নিতেন সেটি কেরোসিনচালিত ট্রাক। ফলে তাঁরা সতর্ক হয়ে যেতেন। এই কারণগুলি প্রচলিত। এর পোক্ত কোনও প্রমাণ যদিও নেই।