ছবি- পিটিআই
সেরামের তৈরি কোভিশিল্ড এবং রুশ টিকা স্পুটনিক ভি-এর চেয়ে বেশি দামে বিকোচ্ছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। প্রতিষেধকের দাম বেঁধে দিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্র জানিয়েছে, টিকা প্রতি কোভিশিল্ডের দাম ৭৮০ টাকার বেশি হবে না। স্পুটনিক ভি-এর সর্বোচ্চ দাম হবে টিকা প্রতি ১,১৪৫ টাকা। অন্য দিকে কোভ্যাক্সিনের সর্বোচ্চ দাম হবে ১,৪১০ টাকা (১৫০ টাকা জিএসটি)। বিদেশের বাজারে ফাইজারের টিকা যে দামে বিক্রি হচ্ছে, ভারত বায়োটেকের টিকার দাম তার কাছাকাছি। সবচেয়ে দামি কোভিড টিকার তালিকায় তিন নম্বরে কোভ্যাক্সিন। কিন্তু কেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভ্যাক্সিন যে প্রক্রিয়া তৈরি হচ্ছে, তাতে উৎপাদনমূল্য অনেকটাই বেশি। যা কোভিশিল্ড, স্পুটনিকের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। নিষ্ক্রিয় ভাইরাস ব্যবহার করে কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক তৈরি করা হয় আর তার জন্য হাজার হাজার লিটারের রক্তরস (সেরাম) বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। যার জেরে উৎপাদনের খরচ বাড়ে, বলছেন সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজির উপদেষ্টা রাকেশ মিশ্র।
তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোভ্যাক্সিনের দাম কোভিশিল্ডের প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার কারণ এটাই। কিন্তু কোভিশিল্ড আর স্পুটনিকের দামে ফারাকের কারণ সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক। এমআরএনএ প্রতিষেধক তৈরি করা সবচেয়ে সহজ এবং খরচও কম।’’ ফাইজার এবং মডার্নার টিকাও এমআরএনএ পদ্ধতিতে তৈরি। এই প্রক্রিয়ায় কোভিডের জন্য দায়ী, এমন ভাইরাস ব্যবহার করা হয় না। বরং ভাইরাসের শরীরে কাঁটার মতো দেখতে স্পাইক প্রোটিন রয়েছে, শরীরকে সেই রকমই কিছু স্পাইক প্রোটিন তৈরি করার নির্দেশ দেওয়াই এমআরএনএ প্রতিষেধকের কাজ, যাতে শরীরও নিজের মতো করে সুরক্ষা বলয় গড়ে তুলতে পারে। রাকেশ মিশ্র জানান, সেই কারণেই নতুন প্রজাতি দমনেও সক্ষম হয় ওই প্রতিষেধক।
প্রসঙ্গত, গত বছরে অগস্ট মাসে ভারত বায়োটেকের কর্ণধার কৃষ্ণা এলা বলেছিলেন, বাজারে জলের বোতলের যা দাম, তার এক-পঞ্চমাংশের চেয়েও কম হবে কোভ্যাক্সিনের দাম। সেই প্রসঙ্গ টেনে টুইটারে কোভ্যাক্সিনের দামের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সমাজকর্মী সেশাগিরি।