হিমাচল প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকা স্পিতি উপত্যকা। স্পিতি নামের অর্থ মধ্যবর্তী এলাকা। ভারত এবং তিব্বতের মাঝে থাকার জন্যই এর এমন নামকরণ।
এই উপত্যকার বাসিন্দাদের মধ্যে একটি অদ্ভুত আচরণ লক্ষ করা যায়। এঁদের প্রায় প্রত্যেকেই বিশেষ এক ধরনের পাথর খান! কেন জানেন?
দুর্গম এই এলাকার মানুষদের যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই করুণ। আশেপাশে কোনও পাহাড়ি শহরে যেতে হলে পায়ে হেঁটেই পৌঁছতে হয় তাঁদের। এই মানুষগুলোর জীবনধারণও খুব সরল।
কোনও রোগ হলে তাঁরা বাজার থেকে ওষুধ কিনে খান না। বদলে আশেপাশে জন্মানো ভেষজ উদ্ভিদ খেয়ে নেন। আবার বদহজম, অ্যাসিডিটি এবং গ্যাসট্রিক-এর সমস্যা হলে তাঁরা একপ্রকার পাথর খান।
স্থানীয়দের কাছে এই পাথরটি চুগ ঝি নামে পরিচিত। স্পিতিতে গেলে খুব সহজেই চোখে পড়ে যাবে এই পাথর।
উজ্জ্বল সাদা রঙের এই পাথর দু’রকম রূপভেদে পাওয়া যায়। একটিকে বলা হয় ফো চোং এবং অন্যটি হল মং চং। ফো চোংকে পুরুষ পাথর এবং মং চং মহিলা পাথর হিসাবে ধরা হয়।
কোনও পুরুষ অসুস্থ হলে তাঁকে মং চং পাথর খাওয়ানো হয় এবং মহিলা অসুস্থ হলে তাঁকে ফো চোং খাওয়ানো হয়।
কী ভাবে ওষুধ তৈরি হয় এই পাথর থেকে? পাথরের টুকরোগুলো সংগ্রহ করে প্রথমে তা গুঁড়ো করে নেওয়া হয়।
তার সঙ্গে মেশানো হয় প্রয়োজন মতো নানা ভেষজ উদ্ভিদ। সব একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি হয় ওষুধ।
বদহজম, অ্যাসিডিটিতে যাঁরা ভুগছেন তাঁদের দিনে দু’বার করে দু’সপ্তাহ ধরে চা চামচের এক চতুর্থাংশ খেতে হবে এই ওষুধ।
ব্যাস তাতেই নাকি মিরাকল! শুনে অবাক লাগলেও দু’সপ্তাহ পর নাকি একেবারে সুস্থ হয়ে ওঠেন রোগী।
কী রয়েছে ওই পাথরে তা সে ভাবে জানা যায়নি। তবে বছরের পর বছর ধরে এই পাথর খেয়েই সুস্থ রয়েছেন স্পিতির মানুষেরা। এর কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও এখনও নজরে আসেনি।