Cyclone

বঙ্গোপসাগর এবং আরবসাগরের ঘূর্ণিঝড় শক্তিশালী হচ্ছে কেন? কেনই বা বৃদ্ধি পাচ্ছে আয়ুষ্কাল?

ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রকের এক রিপোর্টে বলছে, ১৯৫০ সালের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ৯৪ থেকে ১৪০ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের হার ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৩ ১৬:৫৪
Share:

বর্তমানে সমুদ্রের উপরে শক্তিবৃদ্ধি করছে ঘূর্ণিঝড়গুলি। প্রতীকী ছবি।

বঙ্গোপসাগর এবং আরবসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হঠাৎ কেন এত শক্তিশালী হচ্ছে, কেনই বা এই দুই সাগরের সৃষ্ট ঝড়ের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পাচ্ছে? বিজ্ঞানীদের মতে, এর নেপথ্যে রয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ন। আর তার জেরে ভারত মহাসাগরের চরিত্র বদলাচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে এই দুই সাগরের উপর।

Advertisement

‘চেঞ্জিং স্টেটাস অফ ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস ওভার দ্য নর্থ ইন্ডিয়ান ওশন’ শীর্ষক এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, আরবসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রাবল্য এবং সেগুলির আয়ুষ্কাল ১৯৮২-২০১৯ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, ২০০১-’০৯ সালের মধ্যে আরবসাগরে ঘূর্ণিঝড় ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার বঙ্গোপসাগরে ৮ শতাংশ কমেছে।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মিটিওরোলজি-র আবহবিজ্ঞানী রক্সি ম্যাথু কোল বলেছেন, “বর্তমানে যে সব ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে, সেগুলি অনেক দিন ধরে শক্তি সঞ্চয় করে রাখছে। একটি উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে আমপানের কথা। স্থলভাগে বিপুল শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়েছিল সেটি। যার ফলে ধ্বসংলীলাও অনেক বেশি হয়েছে। সমুদ্রের উপরিতল যত গরম হবে এবং তার সঙ্গে যদি হাওয়া অনুকূল হয়, ঘূর্ণিঝড় তত বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে পারে এবং সেই শক্তি অনেক দিন ধরে রাখতে পারে।”

Advertisement

ঘূর্ণিঝড় মোচার ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। সেই বিপুল শক্তিতে ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার বেগে স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দ্য ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) বাংলাদেশ এবং মায়ানমারকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে যে, এই ঝড়ের গতি ভয়ানক থেকে আরও ভয়ানক হবে। তার জেরে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। ফলে নিচু এলাকাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

দেশের ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রকের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯৫০-এর আগে এবং ১৯৫০-এর পরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ৯৪ থেকে ১৪০ হয়েছে। অর্থাৎ, এই সময়ের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের হার ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে। অন্য দিকে, আরবসাগর অঞ্চলে ওই সময়ের মধ্যে ঝড়ের সংখ্যা ২৯ থেকে বেড়ে ৪৪ হয়েছে। অর্থাৎ, ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরোর এক বিজ্ঞানী এমএম আলি আবার বলেছেন, “ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পদ্ধতিতে কোনও বদল আসেনি। আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের উপরিতলের উষ্ণতা বাড়ছে। এর সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রের তাপ ধরে রাখার মাত্রা। ফলে সাম্প্রতিক অতীতে ঘূর্ণিঝড় দ্রুত গতিতে শক্তি বৃদ্ধি করছে।”

বিশ্বে যত পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস তৈরি হয়, তার ৯০ শতাংশ যায় সমুদ্রগর্ভে। এর ফলে বৃদ্ধি পায় সমুদ্রের তাপমাত্রা। ২০২২ সালে সমুদ্রের তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছিল। এমনটাই বলছে ডব্লিউএমও-র ‘স্টেট অফ দ্য গ্লোবাল ক্লাইমেট’-এর রিপোর্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement