ছবি পিটিআই।
পুলিশি এনকাউন্টারে নিহত উত্তরপ্রদেশের গ্যাংস্টার বিকাশ দুবের বিরুদ্ধে ৬৪টি মামলা থাকা সত্ত্বেও বারবার জামিন পেয়েছিল সে। আর তার জন্য গোটা রাজ্যের ক্ষতি হয়েছিল বলে আজ জানাল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে জানান, বিকাশের মতো দুষ্কৃতী জামিন পাওয়ার ফল ভুগতে হয়েছে গোটা উত্তরপ্রদেশকে। এক ব্যক্তির জামিনের আবেদন নাকচ করতে গিয়ে বোবডে স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘আপনি এক ভয়ঙ্কর মানুষ। জামিনে আপনাকে মুক্ত করতে পারব না। দেখলেন তো কী হল (বিকাশ দুবের এনকাউন্টারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে)। উত্তরপ্রদেশকে এর ফল ভুগতে হচ্ছে। কারণ, যার বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি, অপহরণের মতো ৬৪টি মামলা ছিল, তবু বারবার সে জামিনে মুক্তি পেয়ে গিয়েছিল।’’
গত মাসের শেষের দিকে কানপুরের চৌবেপুর এলাকায় বিকাশকে ধরতে গিয়েছিল কানপুর পুলিশের একটা দল। কিন্তু আগেভাগেই সে খবর পৌঁছে গিয়েছিল বিকাশের কাছে। বিকাশ ও তার সঙ্গীদের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ওই দলে থাকা ডিএসপি দেবেন্দ্র মিশ্র-সহ আট পুলিশ কর্মীর। ঘটনার পরে সাত দিন নিখোঁজ থাকলেও উজ্জ্বয়িনী থেকে ধরা পড়ে বিকাশ। এর মধ্যে তার বেশ কয়েক জন সঙ্গীকে এনকাউন্টারে মেরেছিল পুলিশ। উজ্জ্বয়িনী থেকে কানপুর যাওয়ার পথে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় বিকাশেরও। পুলিশের দাবি ছিল, তাদের হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করলে বিকাশকে গুলি করতে তারা বাধ্য হয়। গোটা ঘটনার তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি কমিশন গঠিত হয়েছে। আট পুলিশের মৃত্যুর পরে বিকাশ ও তার দলবলের সঙ্গে পুলিশেরই একটা অংশের যোগসাজস আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বিকাশের এত বার জামিন পাওয়াটাই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হিসেবে উঠে আসছে।
গোটা ঘটনার তদন্ত করতে যে কমিশন গঠিত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি এস চৌহান, উত্তরপ্রদেশের অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি কে এল গুপ্ত এবং হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শশীকান্ত আগরওয়াল। কমিশন থেকে শেষের দু’জনকে বাদ দিতে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ঘনশ্যাম উপাধ্যায় এবং অনুপ প্রকাশ অবস্থী নামে দুই ব্যক্তি। কিন্তু সেই আর্জি আজ খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি বোবডের নেতৃত্বে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানিয়েছে, কমিশনের সদস্যদের গায়ে কোনও কলঙ্কের দাগ লাগাতে আদালত অনুমতি দেবে না।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক-কর্তাদের সঙ্গে আজ বৈঠক মোদীর
আট পুলিশের মৃত্যুর ঘটনায় সাসপেন্ড করা হয়েছিল কানপুরের চৌবেপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর কৃষ্ণ কুমার শর্মা-সহ তিন জনকে। অভিযোগ, বিকাশ ও তার দলবলকে ওই অফিসারেরাই আগে থেকে খবর দিয়েছিলেন। আপাতত জেলে রয়েছেন কৃষ্ণ কুমার। কিন্তু তাঁকে অসাংবিধানিক উপায়ে মেরে ফেলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী বিনীতা সিরোহী। শীর্ষ আদালত আজ তাঁকে জানিয়েছে, এই মামলা তারা শুনবে না। আবেদনকারী তাঁর স্বামীর প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা করলে যেন এলাহাবাদ হাইকোর্টে তাঁর নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেন। কৃষ্ণ কুমারের স্ত্রীর বক্তব্য, তাঁর স্বামী বিকাশকে পুলিশি অভিযানের আগাম খবর দেননি। তিনি যা করার, তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ভুল শুধরে নিন, চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করায় হুঁশিয়ারি বেজিংয়ের