গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
অধিকাংশ বুথফেরত সমীক্ষা বিজেপির জোটকে এগিয়ে রাখলেও মহারাষ্ট্রে ‘কাঁটে কা টক্কর’-এর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গণনার আগেই মহারাষ্ট্রে টানাপড়েন শুরু হয়েছে যুযুধান দুই শিবিরে।
বিতর্কটা প্রথম উস্কে দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নানা পাটোলে। বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার বছর পাঁচেকের মধ্যেই প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব পাওয়া বিদর্ভের এই প্রভাবশালী নেতা ভান্ডারা জেলায় তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। সেখানে উৎসাহী সমর্থকেরা তাঁকে ঘিরে ‘আমাদের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী’ বলে স্লোগান তোলেন। প্রতিবাদ দূর অস্ত, হাসিমুখে অনুগামীদের উদ্দেশে হাত নাড়তে দেখা যায় তাঁকে।
সেই সঙ্গে পাটোলের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘ভোটের ইঙ্গিত বলছে, কংগ্রেসই সবচেয়ে বেশি আসনে জিততে চলেছে।’’ এ বার ২৮৮ আসনের বিধানসভায় আঘাড়ী জোটের তরফে সবচেয়ে বেশি ১০২টিতে লড়ছে কংগ্রেস। উদ্ধবের শিবসেনা (ইউবিটি) ৯২ এবং শরদের এনসিপি(এসপি) ৮৬টিতে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসাবে কোনও নেতার নাম ঘোষণা করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে পাটোলে কৌশলে ভোটের আগেই নিজের নাম হাওয়ায় ভাসাতে চাইছেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।
যদিও শেষ পর্যন্ত আঘাড়ী ক্ষমতায় এলে উদ্ধব শিবির কোনও অবস্থাতেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়বে না বলে তাঁদের ধারণা। পাঁচ বছর আগে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন অবিভক্ত শিবসেনা এবং শরদ পওয়ারের নেতৃত্বাধীন অবিভক্ত এনসিপির সঙ্গে ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’ জোট সরকারে শামিল হয়েছিল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী পদ পেয়েছিলেন উদ্ধব। উপমুখ্যমন্ত্রী হন শরদের ভাইপো অজিত। অজিত বিজেপির সহযোগী হওয়ায় শরদ শিবিরের কোনও নেতা এখন মুখ্যন্ত্রিত্বের দৌড়ে নেই। পাটোলের ওই মন্তব্য প্রসঙ্গে শুক্রবার উদ্ধবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘কংগ্রেসে যা সিদ্ধান্ত তা দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং রাহুল গান্ধী নেবেন।’’
ক্ষমতাসীন বিজেপি-শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে)-এনসিপি (অজিত)-এর জোট ‘মহাজুটি’র অন্দরে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে টানাপড়েন আরও প্রকট। ২০২২-এর জুনে শিবসেনার অধিকাংশ বিধায়ককে পাশে টেনে বিজেপির সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন একনাথ শিন্ডে। কিন্তু এ বার তাঁকে সরিয়ে আরএসএসের পছন্দের নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীসকে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিতে পারে বলে জল্পনা। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার বিজেপিকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিন্ডেসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় শিরসত। বিজেপি আবার শিন্ডেকে মেনে না নিলে কী কবে জানতে চাওয়া হলে সঞ্জয়ের মন্তব্য, ‘‘আমাদের নেতা শিন্ডে। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা তা মেনে চলব।’’