(বাঁ দিক থেকে) অমিত মালবীয়, গৌতম আদানি এবং জর্জ সোরস। —ফাইল চিত্র।
আদানিদের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে যে চারটি রাজ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তার একটিও বিজেপি শাসিত ছিল না সে সময়। আমেরিকার আদালতে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধী নেতাদের অভিযোগের জবাবে বৃহস্পতিবার এই যুক্তি দিল পদ্মশিবির।
বিজেপির আইটি সেলের নেতা অমিত মালবীয় এই ঘটনায় আমেরিকার ধনকুবের জর্জ সোরসের ‘চক্রান্তে’রও ইঙ্গিত দিয়েছেন। এক্স পোস্টে তাঁর মন্তব্য, ‘‘জর্জ সোরসের হাতের পুতুল হওয়াই এখন কংগ্রেসের পছন্দ।’’ ঘটনাচক্রে, গত বছর হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে কারচুপি করে তাদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়ানোর অভিযোগ তোলার পরেও সোরসের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি।
কয়েকটি রাজ্যের সৌর প্রকল্পের জন্য ভারতের সরকারি আধিকারিকদের ২৬.৫ কোটি ডলার (প্রায় ২২৩৭ কোটি টাকা) ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আদানির বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিদ্যুৎ নিগমের আধিকারিকদের ওই ঘুষ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। গৌতম, তাঁর ভাইপো সাগর-সহ মোট সাত জনের বিরুদ্ধে আমেরিকার বিচার বিভাগ এবং সিকিউরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মোট পাঁচটি ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলা দায়ের করেছে। অভিযোগ, আমেরিকা থেকে মূলধন সংগ্রহের নামে আদানি গ্রিন এনার্জির বোর্ড সদস্যেরা বেআইনি পথ নিয়েছেন।
ঘটনাচক্রে, প্রস্তাবিত সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি রূপায়ণের জন্য চিহ্নিত রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা এবং ছত্তীসগঢ়। এ ছাড়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের নামও রয়েছে আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগপত্রে। ঘটনাচক্রে, সে সময় সব ক’টি রাজ্যই বিরোধী শাসিত ছিল। ২০২৩-এর নভেম্বরে ছত্তীসগঢ় এবং চলতি বছরের জুনে ওড়িশায় বিধানসভা ভোটে জয়ী হয় বিজেপি। অন্ধ্রেও টিডিপি-বিজেপি-জনসেনা জোট জয়ী হয়। তবে সে সময় জম্মু ও কাশ্মীর ছিল রাজ্যপালের শাসনে।
লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, “আদানিকে সুরক্ষা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।” পাশাপাশি আদানিকে গ্রেফতারির দাবিও তোলেন তিনি। জবাবে বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘ঘুষের অভিযোগ তো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির দিকে। তৎকালীন কোনও বিজেপি শাসিত রাজ্যের নামে আমেরিকায় অভিযোগ ওঠেনি। রাহুল গান্ধী ২০১৯ সালেও রাফাল যুদ্ধবিমান চুক্তি নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন। পরে আদালত তাঁর অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছিল।’’