mahatma gandhi

Gandhi Statue: গান্ধীর ছবি কে ভাঙল! আঙুল কংগ্রেসের দিকেই

কেরলের ওয়েনাড় জেলার সদর কালপেট্টায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুলের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল এসএফআইয়ের।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২২ ০৭:২১
Share:

ওয়েনাড়ে রাহুল গান্ধীর কার্যালয়ে হামলার পরে গান্ধীজি' র ভাঙা ছবিকে ঘিরে কংগ্রেস নেতারা

ভাঙচুর হয়েছিল রাহুল গান্ধীর সাংসদ কার্যালয়ে। তার জন্য দায়ী সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের গোটা জেলা কমিটিকেই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় স্তর থেকে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বও এমন ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন। তিরস্কার, শাস্তির পর্ব মিটে যাওয়ার পরে এ বার প্রশ্ন উঠেছে অন্য এক গান্ধীকে নিয়ে! রাহুলের ওই কার্যালয়ে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর ছবি আসলে ভেঙেছিল কে? প্রশ্ন তুলছে পুলিশি তদন্ত।

Advertisement

কেরলের ওয়েনাড় জেলার সদর কালপেট্টায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুলের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল এসএফআইয়ের। সাংসদ কার্যালয়ে হামলার সময়ে গান্ধীজির একটি ছবিও দেওয়াল থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেস নেতারা। জাতির জনকের সেই ভাঙা ছবি দেখিয়েই জাতীয় স্তরে কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্ন ছিল, বিপক্ষ দল বা বিপরীত মতাদর্শের প্রতি কী এমন মনোভাবই পোষণ করেন বামপন্থীরা?

হামলার ঘটনায় প্রশাসনিক স্তরে প্রথমে কয়েক জনকে গ্রেফতার, কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে দু’জন পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড এবং সিপিএম সাংগঠনিক স্তরে এসএফআইয়ের ওয়েনাড় জেলা কমিটি ভেঙে দিলেও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষ হয়নি। ওয়েনাড়ের পুলিশ সুপারের রিপোর্ট কেরল পুলিশের ডিজি-র মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র দফতরে জমা পড়ার পরেই গান্ধীজি’র ছবি নিয়ে নতুন বিতর্ক সামনে এসেছে।

Advertisement

ওয়েনাড়ে বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকায় বাফার জ়োন হচ্ছে না কেন, এই প্রশ্ন তুলে সাংসদের কার্যালয়ের কাছে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল এসএফআই। সেই বিক্ষোভ থেকেই মিছিল সাংসদের কার্যালয়ে ঢুকে হামলা করেছিল বলে অভিযোগ। পুলিশের রিপোর্ট বলছে, হামলার পরে বিকাল ৪টে নাগাদ বিক্ষোভকারীরা সাংসদের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বিক্ষোভ হামলার চেহারা নিয়েছে বলে খবর পেয়ে স্থানীয় থানা বাড়তি পুলিশ পাঠিয়েছিল, পুলিশ দেখেই হামলাকারীরা চম্পট দিয়েছিলেন।

কার্যালয়ে গিয়ে দো’তলায় উঠে পুলিশের চিত্রগ্রাহক যে ছবি তুলেছিলেন, তাতে দেওয়ালে গান্ধীজি’র ছবি অবিকৃত দেখা যাচ্ছে। কিছু ক্ষণ পরেই কার্যালয়ে এসে পৌঁছন কংগ্রেস নেতারা। হামলার পরে কার্যালয়ের কী হাল হয়েছে, তা ভাল করে দেখাতে পুলিশকে ডাকেন তাঁরা। সেই বার যখন পুলিশের চিত্রগ্রাহক আবার ছবি তোলেন, তখন গান্ধীজি’র ছবি মেঝেয় পড়ে! ফটোফ্রেমের কাচও ভাঙা। পুলিশ সুপারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, হামলার ঘটনাও কিছু ভিডিয়ো ফুটেজও সেই সময়ে উপস্থিত কিছু লোকজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই ফুটেজেও ওই ঘরে বিক্ষোভকারীরা থাকাকালীন গান্ধীজি’র উপরে হামলার তথ্য নেই। তার জেরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে গান্ধীর ছবি ভাঙা কি কংগ্রেসেরই ‘সাজানো’?

এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি এবং কেরল সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য ভি পি সানুর দাবি, ‘‘গান্ধীকে হত্যা করেছিল গডসে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এখানে আবার যারা গান্ধীকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে, সেটা কংগ্রেস দলই! তদন্তে সেটাই সামনে আসছে।’’ সিপিএম নেতারা আরও দাবি করছেন, গান্ধীজিকে হত্যার সময়ে আসল পরিচয় গোপনের চেষ্টা করেছিলেন নাথুরাম গডসে। কিন্তু চেনা লোকজন দিল্লিতে সেই সময় উপস্থিত থাকায় তাঁরাই ধরিয়ে দেন, গডসে আরএসএসের লোক। আর এখানে গান্ধীজি’র ছবি ভেঙে বামেদের নামে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে! সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং কেরল এলডিএফের আহ্বায়ক ই পি জয়রাজন অবশ্য একই সঙ্গে বলছেন, ‘‘ওই বিক্ষোভ ও হামলা একেবারে অপ্রয়োজনীয় ছিল, আমরা আগেই স্পষ্ট করে বলেছি। তবে তার মধ্যেও কিছু ষড়যন্ত্র ছিল, সে সব তদন্তে প্রকাশ পাবে।’’ আর বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের ভি ডি সতীশনের বক্তব্য, ‘‘পুলিশ সব ঠিক বলছে, এমনটা ধরে নেওয়ার কী আছে! এসএফআই দায়িত্বজ্ঞানহীন একটা কাজ করেছে, তার পরেও রাহুল গান্ধী তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। এটাই মূল কথা!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement