মনরেগা তহবিল কেলেঙ্কারির অভিযোগে ঝাড়খণ্ডের খনি-সচিব পূজা সিঙ্ঘল, তাঁর স্বামী এবং ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের বাড়িতে শুক্রবার তল্লাশি চালায় ইডি। ঝাড়খণ্ড, বিহার, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ এবং পঞ্জাব-সহ দেশের ১৮টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে নগদ ১৯ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।
পূজা সিঙ্ঘলই নয়, তাঁর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সুমন কুমারের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি। যে ১৯ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে ১৭ কোটি টাকাই মিলেছে সুমনের বাড়ি থেকে।
তল্লাশি চালানোর সময় পূজার ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পান ইডির আধিকারিকরা। মুজফ্ফরপুরে পূজার শ্বশুরবাড়ি, দিল্লিতে তাঁর বাপের বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছে ইডি।
পূজা বর্ণময় চরিত্র। তাঁর ঝুলিতে যেমন রেকর্ড রয়েছে। তেমনই জড়িয়েছেন নানা বিতর্কেও।
২১ বছর বয়সে এক জন আইএএস হওয়ায় লিমকা বুক-এ সবচেয়ে কম বয়সে আমলা হওয়ার রেকর্ড রয়েছে তাঁর দখলে। ২০০০ ব্যাচের আইএএস ক্যাডার পূজা।
কাজের সুবাদে যেখানে যেখানে পূজার পোস্টিং হয়েছিল সেখানেই তাঁর বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাঁর পারিবারিক জীবনেও নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন পূজা।
সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করার পর আইএএস আধিকারিক রাহুল পুরবারকে বিয়ে করেন পূজা।
বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই পূজা এবং রাহুলের সম্পর্কে সমস্যা শুরু হয়। তার পরই তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।
রাহুলের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন পূজা। এ বার পাত্র অভিষেক ঝা।
এক জন আমলা হওয়ার সুবাদে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের নানা রকম সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পূজার বিরুদ্ধে। শ্বশুরবাড়িকে ব্যবসায় সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
পূজা ঝাড়খণ্ড সরকারের খনি এবং ভূতত্ত্ব দফতরের সচিব পদে কর্মরত।
ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলার ডেপুটি কমিশনার ছাড়াও ঝাড়খণ্ড স্টেট মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন-এর চেয়ারম্যান হিসেবেও কর্মরত পূজা।
ছাতরা, খুঁটি এবং পলামু জেলায় ডেপুটি কমিশনার পদে থাকাকালীন পূজার বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল বলে নবভারত টাইমস-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
পূজার স্বামী অভিষেক ঝা রাঁচীর পালস সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর।
পূজার ভাই সিদ্ধার্থ সিঙ্ঘল পালস সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ডিরেক্টরদের মধ্যে এক জন। ইডি তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছে।