Gorkha

Gorkha-Ian Cardozo: তাঁকে নিয়ে সিনেমা বলিউডে, অভিনয়ে অক্ষয় কুমার, এক পায়েই নেতৃত্ব দেন গোর্খা সেনাকর্তা

ভারত বনাম পূর্ব পাকিস্তানের যুদ্ধে তিনি ছিলেন ব্যাটেলিয়নের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। এই যুদ্ধক্ষেত্রেই ইয়ানের একটি পা বাদ যায়।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২১ ১৬:৫৩
Share:
০১ ১৪

বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার তাঁর আসন্ন ছবির পোস্টার প্রকাশ করেছেন টুইটারে। সিনেমার নাম ‘গোর্খা’। হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষার পোস্টারে অক্ষয়কে দেখা যাচ্ছে সেনাবাহিনীর পোশাকে। হাতে একটি খুখরী। যা গোর্খাদের অস্ত্র বলে পরিচিত।

০২ ১৪

পোস্টারটির ছবি দিয়ে অক্ষয় লিখেছিলেন, ‘বাস্তবের কিছু কাহিনি মাঝে মধ্যে এত অনুপ্রাণিত করে যে, সেই কাহিনি নিয়ে তখনই সিনেমা বানিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। বৈগ্রহিক যুদ্ধনায়ক মেজর জেনারেল ইয়ান করডোজোর গল্প সেই ধরনের। ‘গোর্খা’ তাঁরই জীবন কাহিনি। তাঁর ভূমিকায় অভিনয় করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।’ যদিও অক্ষয়ের এই পোস্ট এবং ছবি— দুই-ই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।

Advertisement
০৩ ১৪

প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ছবি যখন গোর্খা বাহিনীর যুদ্ধনায়ককে নিয়ে, তখন তাঁর চরিত্রে পঞ্জাবী বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক অক্ষয়কে বেছে নেওয়া হল কেন? ৩৫ বছরের এক তরুণ সেনানায়কের চরিত্রে ৫১ বছরের অভিনেতা কেন অভিনয় করবেন, সে প্রশ্নও তোলেন অনেকে।

০৪ ১৪

জবাবে অক্ষয়ের অনুরাগীরা অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘যাঁকে নিয়ে ছবি, সেই ইয়ান গোর্খা বাহিনীর কর্তা হলেও গোর্খা বংশোদ্ভূত নন। তাই তার ভূমিকায় অভিনয়ে অক্ষয়ের কোনও বাধা থাকে না।’’

০৫ ১৪

কিন্তু গোর্খা বাহিনীর যুদ্ধনায়ক ওই সেনা কর্তা আসলে কে? তাঁর কাহিনি কেন অনুপ্রাণিত করেছে বলিউডের অভিনেতা অক্ষয়কে?

০৬ ১৪

মুম্বইয়ে জন্ম ইয়ানের। ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি এবং ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমির তিনিই প্রথম ছাত্র, যিনি একই বছরে সোনা এবং রুপোর পদক পেয়েছিলেন। অ্যাকাডেমিতে সার্বিক ক্ষেত্রে সেরাকে সোনার পদক দেওয়া হয়। সেরা নম্বর প্রাপককে দেওয়া হয় রুপোর পদক। সেই প্রথম সার্বিক সেরা এবং নম্বরে সেরা ছাত্র হয়েছিলেন এক জনই। ইয়ানের পরও এই কৃতিত্ব কেবল এক জনই অর্জন করেছেন।

০৭ ১৪

ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তিনি ৫ গোর্খা রাইফেলস-এ যোগ দেন। গোর্খা রাইফেলস-এ মেজর জেনারেল ইয়ান কার্ডোজো আজও একটি বৈগ্রহিক নাম। অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা অধিকর্তা ভারতীয় বাহিনীর প্রথম সেনা কর্তা, যিনি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও একটি ব্যাটেলিয়ন এবং ব্রিগেডের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

০৮ ১৪

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে লড়েছিলেন ইয়ান। পরে ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারত বনাম পূর্ব পাকিস্তানের যুদ্ধে তিনি ছিলেন ব্যাটেলিয়নের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। এই যুদ্ধক্ষেত্রেই ইয়ানের একটি পা বাদ যায়।

০৯ ১৪

সিলেটের যুদ্ধে তখন ঢাকার পতন হয়েছে। ভুলবশত একটি তাজা মাইনে পা দিয়ে ফেলেছিলেন ইয়ান। মাইন ফেটে গুরুতর জখম হন। চিকিৎসক ছিল না। ছিল না মরফিন জাতীয় ব্যথা উপশমের ওষুধ। যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে খুখরী দিয়ে নিজের পা কেটে বাদ দিয়েছিলেন সেনাকর্তা।

১০ ১৪

পরে অবশ্য তাঁর বাহিনীর সেনা কর্মীরা পাকিস্তানের এক সেনা চিকিৎসককে বন্দি করে আনেন ইয়ানের চিকিৎসার জন্য। সেই পাক চিকিৎসকই ইয়ানের পায়ে অস্ত্রোপচার করেন।

১১ ১৪

সাধারণত ভারতীয় সেনাবাহিনীতে শারীরিক ভাবে অক্ষম সেনা কর্মীদের বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হয়। তবে ইয়ানের এর পরও পদোন্নতি হয়েছিল। ১৯৮৪ সালে ব্রিগেডিয়ার পদে উন্নীত হন তিনি। ব্যাটেলিয়ন এবং ব্রিগেডের নেতৃত্ব দেন। ১৯৯৩ সালে অবসর নেন মেজর জেনারেল হিসেবে।

১২ ১৪

ইয়ানকে অবশ্য তার জন্য পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। একটি পা বাদ যাওয়ার পর কিছুটা বাধ্য হয়েই কাঠের পা পরতে হয়েছিল ইয়ানকে। তবে কৃত্রিম পায়েও যে তিনি অনেকের থেকে বেশি সক্ষম, তা হাতে কলমে প্রমাণ করেছিলেন ইয়ান।

১৩ ১৪

শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষায় তাঁর তথাকথিত ‘সক্ষম’ সহকর্মীদের প্রায় প্রত্যেককে পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন। তারপরও তাঁর পরীক্ষা নেওয়া হয়। ইয়ানকে সঙ্গে নিয়ে লাদাখে যান তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল তাপীশ্বর নারাইন রায়না। পাহাড়ের চড়াইয়ে বরফের মধ্যে ইয়ানকে হাঁটতে দেখে আশ্বস্ত হন প্রধান। এর পরই পদোন্নতি হয় ইয়ানের।

১৪ ১৪

বিয়ে করেছিলেন প্রিসিলা কার্ডোজোকে। তিন পুত্র সন্তানের বাবা ইয়ান। কাঠের পায়ে এখনও ম্যারাথনে দৌড়ন। এর আগে নিজেই নিজের জীবন কাহিনি নিয়ে বই লিখেছিলেন। তবে সিনেমায় এই প্রথম তাঁর জীবন কাহিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement