—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মানব পাচারের অভিযোগে সম্প্রতি নিকারাগুয়ার উদ্দেশে যাওয়া একটি বিমানকে ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে আটকে রেখেছিল ফরাসি প্রশাসন। চার্টার্ড বিমানটিতে থাকা ৩০৩ জন যাত্রীর মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন ভারতীয়। ওই যাত্রীদের মধ্যে গুজরাতের বাসিন্দা ছিলেন ৬০ জন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, এমনই ২০ জন যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে গুজরাত পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই যাত্রীরা অবৈধ উপায়ে অন্য কোনও দেশ হয়ে আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করছিলেন কি না, তা এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনিতেই গুজরাত, পঞ্জাব, হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলি থেকে প্রতি বছরই এজেন্টদের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে আমেরিকা কিংবা ইউরোপের কোনও দেশে পাড়ি দেন বহু মানুষ। সুদিনের আশায় কেউ গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন, বাকিরা মাঝপথেই নিরুদ্দেশ হয়ে যান। এই অবৈধ উপায়ে আমেরিকা কিংবা ইউরোপের উন্নত কোনও দেশে ঢোকার সফরকেই ‘ডাঙ্কিরুট’ বলা হয়, যা নিয়ে সম্প্রতি সিনেমা বানিয়েছেন রাজকুমার হিরানি।
গুজরাত সিআইডি-র এক কর্তা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, বিমানে থাকা গুজরাতের যাত্রীরা কেন নিকারাগুয়া যাচ্ছিলেন, সেখান থেকে আমেরিকায় যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল কি না, সেই পরিকল্পনা থাকলে এই ‘ডাঙ্কিরুটে’র ছক কষেছিলেন কে, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। গুজরাত পুলিশের আর এক শীর্ষকর্তা জানান, জল্পনা ছড়িয়েছে যে, বিমানে থাকা যাত্রীরা অবৈধ উপায়ে আমেরিকায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাই আমরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ইতিমধ্যেই ফ্রান্সের সংগঠিত অপরাধ দমন শাখা ‘জুনালকো’ বিমানটির সঙ্গে কোনও অপরাধচক্র যুক্ত কি না, তার তদন্ত শুরু করেছে।
গত ২২ ডিসেম্বর জ্বালানি ভরার জন্য প্যারিস থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে শালোন-ভ্যাত্রি বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিল বিমানটি। বিমানে যাত্রীদের মধ্যে ছিল ১১টি শিশু, যাদের কোনও অভিভাবক ছিল না। ফরাসি প্রশাসনের সন্দেহ হয় যে, পাচারের উদ্দেশেই তাদের নিকারাগুয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তৎক্ষণাৎ বিমানটিকে আটক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দর চত্বরেই থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়। ফ্রান্সের একটি আদালতের নির্দেশে অবশ্য সোমবার ভারতের উদ্দেশে উড়ে যায় বিমানটি। মঙ্গলবার ভোরে সেটি মুম্বই বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যাত্রীদের মধ্যে দুই শিশু-সহ মোট ২৭ জন ফ্রান্সেই থেকে যান। একটি সূত্র মারফত জানা যায়, নিরাপত্তার কারণে তাঁরা ফ্রান্সেই আশ্রয় চেয়েছেন।