মেসেজিং অ্যাপ কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে সন্দিহান হতে শুরু করেছেন অনেকেই। প্রতীকী ছবি।
২০১৭ সালের পুরনো একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। তাতে ‘কে’-র কাছে ‘ডি’-র অনুরোধ, গাঁজা এনে দেওয়ার। পুরনো ওই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট প্রকাশ্যে আসতেই কার্যত ‘বিস্ফোরণ’ বলিউডে! ফাঁস হয়ে যাওয়া চ্যাটের জেরে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র নজরে বলিডডের প্রথম সারির অভিনেতা দীপিকা পাড়ুকোন। বলি-মহলের একাংশের দাবি, ওই চ্যাটের ‘ডি’-ই আসলে দীপিকা। সুশান্ত সিংহ রাজপুত মৃত্যু তদন্তে আজ, শুক্রবার এনসিবি-র জেরার মুখে তিনি। গোটা কাণ্ডে দীপিকার পাশাপাশি প্রবল অস্বস্তিতে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষও। দু’পক্ষের মধ্য়ে কথাবার্তা গোপন থাকার যে প্রতিশ্রুতি তাঁরা বরাবর দিয়ে এসেছেন, প্রশ্ন উঠেছে সেই আশ্বাসবাণী নিয়েও। গোটা কাণ্ডে অবশেষে মুখ খুলেছেন হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। সুরক্ষা নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের ফের ভরসা দিয়েছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতিতে হোয়াটসঅ্যাপের মুখপাত্র বলেন, “হোয়াটসঅ্যাপে আপনাদের সব মেসেজ এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন করা থাকে। যাতে কেবলমাত্র আপনি এবং যাঁকে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে, সেই ব্য়ক্তি ছাড়া অন্য কেউ ওই মেসেজ পড়তে না পারে, এমনকি হোয়াটসঅ্যাপও নয়। এটা মনে রাখা জরুরি যে হোয়াটসঅ্যাপে শুধুমাত্র একটি মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে ঢোকা যায় এবং আপনাদের মেসেজে কী আছে, তা দেখতে পারে না হোয়াটসঅ্যাপ।”
তবে এই বিবৃতি সত্ত্বেও ওই মেসেজিং অ্যাপ কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়েও সন্দিহান হতে শুরু করেছেন অনেকেই। সুরক্ষার এই কড়াকড়ি সত্ত্বেও কী ভাবে ফাঁস হয়ে গেল সুশান্তের প্রাক্তন ট্যালেন্ট এজেন্ট জয়া সাহার ওই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট? এ নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও সুরক্ষা নিয়ে যে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ আপস করেন না, তা জানিয়ে ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “মোবাইলে যে (সমস্ত চ্যাট) রেখে দেওয়া হয়, তার সুরক্ষায় (মোবাইলের) অপারেটিং সিস্টেম প্রস্তুতকারীদের নির্দেশ মেনে চলে হোয়াটসঅ্যাপ। তা ছাড়া, ওই অপারেটিং সিস্টেমের নিজস্ব যে সিকিউরিটি রয়েছে, তা মাথায় রাখতেও ব্যবহারকারীদের উৎসাহ দিই আমরা। যেমন, একটা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড বা বায়োমেট্রিক আইডি ব্যবহার করা, যাতে আপনাদের কনটেন্ট মোবাইলের যেখানেই স্টোর করা হোক না কেন, তা কোনও তৃতীয় পক্ষের হাতে যেন না পড়ে।”
আরও পড়ুন: বহু প্রশ্নের মধ্যেই আজ জিজ্ঞাসাবাদ দীপিকা পাড়ুকোনকে
আরও পড়ুন: ডাঁটার পরোটা খাই, মোদী জানালেন চর্চায়
তবে দীপিকাদের তথাকথিত চ্যাট কী ভাবে ফাঁস হল তা নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ মন্তব্য না করলেও অনেকের মতে, মোবাইল ক্লোনিং টেকনোলজি ব্যবহার করেই ওই চ্যাট উদ্ধার করা হয়েছে। ২০০৫ সালের ওই প্রযুক্তির সাহায্যে যে কোনও মোবাইল ফোন ক্লোন করা যায়। এবং ওই মোবাইলের যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নেওয়া যায়। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের তথ্য গুগল ড্রাইভ বা আইক্লাউডের মতো জায়গায় থাকলেও ‘চ্যাট ব্যাকআপ’ থেকে মেসেজ বার করা যায়।
আরও পড়ুন: ৯ জনকে চলতি সপ্তাহেই কোভিশিল্ড
ক্লোনিং-এর সাহায্যে একটি অ্যাপের মাধ্যামে যে কোনও মোবাইলের যাবতীয় তথ্য নকল করে নতুন একটি মোবাইলে পাঠিয়েও দেওয়া যায়। এমনকি, এই প্রযুক্তিতে ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল স্টেশন ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমইআই) নম্বরও ট্রান্সফার করা সহজ। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ হাতানো বেআইনি। তবে তদন্তের স্বার্থে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা আইনি ভাবেই এ প্রযুক্তির মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ দেখতে পারেন।