Gautam Adani in Bribery Case

আদানির ‘ঘুষের বড় অংশ গিয়েছে অন্ধ্রে’! তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জগনের নামও জড়াল, কী বলছে তাঁর দল

বাজারের থেকে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত পেতে অন্ধ্র-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দিয়েছিলেন আদানিরা। সেই সূত্রেই আতশকাচের তলায় চলে এসেছে জগনের ভূমিকাও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০৭
Share:

(বাঁ দিকে) গৌতম আদানি এবং জগন্মোহন রেড্ডি (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ঘুষকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ছ’জনের। আমেরিকার আদালত সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়া এবং ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে আদানিকে। অভিযোগ, বাজারের থেকে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত পেতে অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দিয়েছিলেন আদানিরা। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ উঠেছে অন্ধ্রের এক শীর্ষ আমলার বিরুদ্ধে। আর সেই সূত্রেই আতশকাচের তলায় চলে এসেছে অন্ধ্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি এবং তাঁর দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ভূমিকাও। বিতর্কের আবহে এ বার এই প্রসঙ্গে মুখ খুলল জগনের দল।

Advertisement

অভিযোগ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সোলার এনার্জি কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (সেকি) এবং অন্ধ্রের সরকারি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার মধ্যে মউ (সমঝোতাপত্র) স্বাক্ষরের জন্য ১৭৫০ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন আদানি। অভিযোগ মোতাবেক, ২০২১ সালের অগস্ট মাসে অন্ধ্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জগনের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলার জন্য দেখাও করেছিলেন আদানি। তার পরেই নাকি ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে অন্ধ্রের সরকারি সংস্থার সঙ্গে সোলার এনার্জি কর্পোরেশনের সাত হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এই বিষয়ে জগন এখনও মুখ না-খুললেও তাঁর দলের তরফে শুক্রবার একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “অন্ধ্রের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা আদানি গোষ্ঠী বা তার নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থাগুলির সঙ্গে তো নয়ই, অন্য কোনও সংস্থার সঙ্গেও সরাসরি সমঝোতা করেনি।” জগন সরকারের আমলে ওঠা এই অনিয়মের অভিযোগকে ‘যথাযথ নয়’ বলেও দাবি করেছে ২০১৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত অন্ধ্রের ক্ষমতায় থাকা ওয়াইএসআর কংগ্রেস।

Advertisement

জগনের দলের তরফে আরও বলা হয়েছে, কৃষকদের সুরাহা দিতে ১০ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দরপত্র ডেকেছিল অন্ধ্রের তৎকালীন সরকার। ২৪টি সংস্থা সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আগ্রহও দেখিয়েছিল। কিন্তু নানা আইনি কারণে সেই প্রকল্প আর দিনের আলো দেখেনি। জগনের দলের দাবি মোতাবেক, এমতাবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সোলার এনার্জি কর্পোরেশন অন্ধ্র সরকারকে ২.৪৯ টাকায় এক কিলোওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ দেওয়ার শর্তে মোট সাত হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাব দেয়। তার পরেই ওই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার বিষয়ে অন্ধ্র সরকার ছাড়পত্র দেয় বলে দাবি করেছে জগনের দল।

অভিযোগ মোতাবেক, ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর ‘আদানি গ্রিন’-এর কাছ থেকে সোলার এনার্জি কর্পোরেশন ৮ গিগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেনার বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করে। ৪ গিগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেনার বিষয়ে সমঝোতা হয় দিল্লির সংস্থা ‘অ্যাজ়ুওর পাওয়ার’-এর সঙ্গে। অভিযোগ মোতাবেক, তার পরেই অন্ধ্র, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, তামিলনাড়ু এবং জম্মু ও কাশ্মীরে সোলার এনার্জি কর্পোরেশন যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহের বরাত পেতে পারে, তার জন্য উদ্যোগী হন আদানি।

সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ভারতের ‘সরকারি আধিকারিকদের’ (যাঁর মধ্যে নেতা-মন্ত্রীরাও রয়েছেন) ২৬.৫ কোটি ডলার (প্রায় ২২৩৭ কোটি টাকা) ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আদানিদের বিরুদ্ধে। সবচেয়ে বেশি ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অন্ধ্রপ্রদেশেই। কিন্তু ভারতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ভারতীয় নেতা-মন্ত্রী-আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে আদানিদের বিরুদ্ধে কেন আমেরিকায় মামলা হল? কারণ, ‘আদানি গ্রিন এনার্জি’ আমেরিকার শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছে। সে দেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করলে তারা আমেরিকার আইন মেনে চলতে বাধ্য। এ ক্ষেত্রে তারা ঘুষের টাকা আমেরিকার বাজার থেকে সংগ্রহ করেছে বলে অভিযোগ, যা পুরোপুরি বেআইনি। ফলে মামলার মুখে পড়েছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement