জমাদারদের নিয়ে আইন ২০১৩ সালে বলবৎ হওয়ার পরই ২০১৪ সাল থেকে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে নতুন সরকার। ছবি: সংগৃহীত।
সমাজের ময়লা পরিষ্কারের গুরুভার তাঁদের কাঁধে। যদিও সেই বোঝা লাঘবে বহু দিন আগেই বলবৎ হয়েছে আইন। জমাদার, মেথর বা ধাঙড়ের কাজ মেশিনের কাঁধে দিয়ে এই পেশার সঙ্গে যুক্তদের অন্য কাজ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ২০১৩ সালের আইনে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইল, সেই আইন প্রয়োগের ব্যাপারে কত দূর এগিয়েছে কেন্দ্র। গত ১০ বছরে মেথরদের ময়লা পরিষ্কারের কাজের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নতুন কাজ দেওয়ার ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যভিত্তিক রিপোর্ট চেয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যেই সেই রিপোর্ট দিতে হবে আদালতকে।
১৯৯৩ সালেই বলবৎ হয়েছিল এ সংক্রান্ত আইন। তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল বর্জ্য পরিষ্কারের জন্য আর মানুষের শ্রম ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি, ম্যানহোল পরিষ্কার করা বা বিনা জলের শৌচাগার (খাটা পায়খানা) পরিষ্কারের যে কাজ আগে মেথর বা ধাঙড়দের করতে হত, তা-ও বন্ধ করতে হবে। তবে তারও আগে বন্ধ করতে হবে খাটা পায়খানা জাতীয় শৌচাগারের ব্যবহার। ১৯৯৩ সালের ওই আইনের ২০ বছর পর ২০১৩ সালে এই পেশায় যুক্ত পুরনো পেশাদারদের পুনর্বাসন দেওয়ার আইনও প্রণয়ন করা হয়। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছে এই দু’টি আইন বলবৎ করার কাজে কতটা এগিয়েছে কেন্দ্র?
২০১৩ সালে এই আইন বলবৎ হওয়ার পর ২০১৪ সাল থেকেই কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে নতুন সরকার। বস্তুত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের পরিচ্ছন্নতাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ‘স্বচ্ছ ভারত’কে জনপ্রিয় করে তুলেছিল মোদী সরকার। সুপ্রিম কোর্ট সেই সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে, মেথরদের কল্যাণকল্পে কতটা এগিয়েছে তারা।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এস আর ভট্ট এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যে সরকার আদালতকে জানাবে, বিনা জলের শৌচাগারের ব্যবহার কতটা কমাতে পেরেছে প্রশাসন। প্রতি রাজ্যে এখনও কত এমন শৌচাগার রয়েছে। রাজ্যভিত্তিক মেথরদের সংখ্যা এবং কত জনকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে, তারও হিসাব চেয়েছে কোর্ট। একই সঙ্গে আদালত জানতে চেয়েছে, ময়লা পরিষ্কারের বিকল্প পথ হিসাবে কী কী ব্যবহার করা হচ্ছে, মেশিন ব্যবহার করে পরিষ্কার করা হচ্ছে কি না, এমনকি, ম্যানহোল বা ময়লার কূপে পড়ে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তারও হিসাব চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।