ছবি: পিটিআই।
চাবি না পেয়ে তালা ভেঙেই রত্নভান্ডারের ভিতরের কক্ষে প্রবেশ করল ১১ সদস্যের কমিটি। তবে দরজা খুলতেই তাদের স্বাগত জানাল ঝাঁক ঝাঁক বাদুড়! অন্ধকার প্রকোষ্ঠে ঢোকার আগে ডাক পড়ল সর্প বিশেষজ্ঞদেরও।
রবিবার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারের দরজা খোলা হয় ‘পবিত্র মুহূর্ত’ দুপুর ১টা বেজে ২৮ মিনিটে। তার পর থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রত্নভান্ডারের ভিতরেই ছিল ১১ সদস্যের কমিটি। চার ঘণ্টায় বাইরের রত্নকক্ষে থাকা অলঙ্কারসামগ্রী সিন্দুকে ভরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মন্দির চত্বরে অস্থায়ী ভাবে নির্মিত একটি সুরক্ষিত ‘ভল্টে’। কিন্তু ভিতরের রত্নকক্ষটি খুলতে অনেকখানি সময় লেগে যায়। মন্দির সূত্রে খবর, ভিতরের রত্নকক্ষের একটি তালা না খোলায় শেষ পর্যন্ত তালা ভেঙেই ভিতরে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নেন বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যেরা। কিন্তু, তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করতেই ঝাঁক ঝাঁক বাদুড় বেরিয়ে আসে ভিতর থেকে। এর পরেই কমিটির সদস্যেরা ভিতরে তলব করেন স্নেক হেল্পলাইনের তরফে মন্দিরে হাজির সর্প বিশেষজ্ঞদের। তাঁরা ভিতরে গিয়ে পরীক্ষা করে রত্নকক্ষটিকে ‘নিরাপদ’ বলার পরেই ভিতরের রত্নকক্ষে প্রবেশ করে ১১ জনের কমিটি। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত ভিতরের কক্ষের কাজ বিশেষ এগোয়নি।
মন্দিরের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের মুখ্য প্রশাসক অরবিন্দ পাধি বাইরে এসে জানান, ভিতরের কক্ষে প্রবেশ করার সময় দেখা গিয়েছে, হাতে আর বেশি সময় নেই। তাই ওই কাজের জন্য অন্য একটি দিন নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কী আছে রত্নকক্ষে?
১। ‘ওড়িশা রিভিউ’ নামে একটি পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ওড়িশার রাজা অনঙ্গভীম দেব জগন্নাথদেবের অলঙ্কার তৈরির জন্য প্রায় দেড় হাজার কেজি সোনা দিয়েছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষকে। সেই সোনা রত্নভান্ডারেই থাকার কথা।
২। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু বাইরের প্রকোষ্ঠেই রয়েছে জগন্নাথের একটি সোনার মুকুট এবং তিনটি সোনার হরিদকণ্ঠী মালা। প্রত্যেকটি তৈরি হয়েছে ১২০ তোলা অর্থাৎ ১৪০০ গ্রাম (প্রায় দেড় কেজি) সোনা দিয়ে।
৩। জগন্নাথদেব এবং বলভদ্রের সোনার শ্রীভুজ বা হাত এবং শ্রীপয়ার বা পা-ও রয়েছে রত্নভান্ডারে।
৪। ভিতরের রত্নকক্ষে আছে ৭৪টি সোনার গহনা। প্রত্যেকটির ওজন কম পক্ষে ১ কেজি করে।
৫। এ ছাড়া রয়েছে সোনা, হিরে, প্রবাল, মুক্তো দিয়ে তৈরি ‘প্লেট’।
৬। ১৪০টি ভারী রূপার গহনাও রয়েছে মন্দিরের ভিতরের রত্নকক্ষে।