পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারের দরজা খুলল ৪৬ বছর পরে। কিন্তু তার ভিতরে কী কী রয়েছে, তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ মন্দির কর্তৃপক্ষ। তবে তাঁরা না বললেও পুরনো একটি গেজেট পত্রিকায় সে ব্যাপারে তথ্য মিলেছে।
রবিবার ৮০০ বছরের পুরনো মন্দিরের ভান্ডার থেকে বহু অলঙ্কার এবং রত্ন সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মন্দির চত্বরেই অস্থায়ী ভাবে তৈরি একটি সুরক্ষিত প্রকাষ্ঠে।
রত্নভান্ডারের ভিতরে দু’টি প্রকোষ্ঠ বা রত্নকক্ষ রয়েছে। একটি বাইরের কক্ষ। অন্যটি ভিতরের। দু’টি কক্ষের ভিতরেই রয়েছে জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার অলঙ্কারসামগ্রী।
এর মধ্যে বাইরের কক্ষটি থেকে যাবতীয় অলঙ্কার সিন্দুকে ভরে অস্থায়ী ‘ভল্টে’ রাখা হলেও ভিতরের কক্ষ থেকে প্রায় কিছুই বার করে আনা যায়নি।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন , সময় পেরিয়ে যাওয়ার কারণেই মাঝপথে কাজ বন্ধ করতে হয়। তবে তালা ভেঙে ভিতরের কক্ষটিতে প্রবেশ করা গিয়েছে। সেখানে কবে কাজ হবে, তার দিন পরে ঠিক করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
কী কী পাওয়া গিয়েছে রত্নভান্ডার থেকে? এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল রত্নভান্ডারে প্রবেশাধিকার পাওয়া ১১ সদস্যের দলের এক প্রতিনিধিকে। তিনি বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।
যদিও ওড়িশা রিভিউ নামে একটি গেজেট পত্রিকায় এ ব্যাপারে অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
২০১১ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত ওই পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ওড়িশার রাজা অনঙ্গভীম দেব জগন্নাথদেবের অলঙ্কার তৈরির জন্য প্রায় দেড় হাজার কেজি সোনা দিয়েছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষকে। সেই সোনা রত্নভান্ডারেই থাকার কথা।
ওই প্রতিবেদনে এ-ও বলা হয়েছে যে, শুধু বাইরের প্রকোষ্ঠেই রয়েছে জগন্নাথের একটি সোনার মুকুট এবং তিনটি সোনার হরিদকণ্ঠী মালা। প্রত্যেকটি তৈরি হয়েছে ১২০ তোলা, অর্থাৎ ১৪০০ গ্রাম (প্রায় দেড় কেজি) সোনা দিয়ে।
এ ছাড়া রত্নভান্ডারে রয়েছে জগন্নাথ এবং বলভদ্রের সোনার তৈরি শ্রীভুজ বা সোনার হাত।
রয়েছ জগন্নাথ এবং বলভদ্রের সোনার পা-ও। ভিতরের রত্নকক্ষে আছে ৭৪টি সোনার গহনা। প্রত্যেকটির ওজন কমপক্ষে ১ কেজি করে।
এ ছাড়া রয়েছে সোনা, হিরে, প্রবাল, মুক্তো দিয়ে তৈরি ‘প্লেট’। ১৪০টি ভারী রূপার গহনাও রয়েছে মন্দিরের ভিতরের রত্নকক্ষে।
এ ছাড়া জগন্নাথের অলঙ্কারসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে সোনার তৈরি ময়ূরের পালক। কপালে পরার সোনার পট্টি। যার নাম চালুপাটি।
রয়েছে জগন্নাথের সোনার কানের দুল শ্রীকুণ্ডল। সোনার কদম্ব মালা, সোনার চক্র, সোনার গদা, সোনার পদ্ম এবং সোনার শঙ্খ।
রত্নখচিত সোনার তৃতীয় নয়নও রয়েছে জগন্নাথ এবং সুভদ্রার গহনার তালিকায়। সোনার পাতের তৈরি একটি চোখের মাঝে রয়েছে হিরে। অন্যটির মাঝে রয়েছে পান্না।