মহুয়া মৈত্র, কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত সাংসদ। — ফাইল ছবি।
‘প্রশ্ন-ঘুষ’কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদপদ খারিজ হয়ে গিয়েছে। লোকসভার এথিক্স কমিটির রিপোর্ট শুক্রবারই লোকসভায় জমা পড়ে। তার পরেই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে ধ্বনিভোটে খারিজ হয়ে যায় মহুয়ায় সাংসদপদ। ‘ইন্ডিয়া’ ব্লকের সাংসদরা রিপোর্টটি ভাল করে পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিলেন। তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ৪৮ ঘণ্টা সময় চেয়েছিলেন। কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী অন্তত দু’-তিন দিন সময় চেয়েছিলেন চারশো পাতারও বেশি রিপোর্টটিকে পড়ে দেখতে। কিন্তু অধীরের অভিযোগ, রিপোর্ট জমা পড়ার দু’ঘণ্টার মধ্যে তা নিয়ে আলোচনার ডাক দেওয়া হয়েছে। কী আছে এথিক্স কমিটির ওই রিপোর্টে?
সূত্রের খবর, রিপোর্টে আছে, তৃণমূলের সাংসদ লোকসভার লগইন আইডি অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার কাজকে ‘অনৈতিক আচরণ’ এবং ‘সংসদের অবমাননা’ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে। এথিক্স কমিটি রিপোর্টে মহুয়াকে কড়া শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে রিপোর্টে আরও সুপারিশ করা হয়েছে যে, মহুয়ার সাংসদপদ যেন খারিজ করা হয়। এ ছাড়াও রিপোর্টে মহুয়ার বিরুদ্ধে সরকারি তদন্তের কথাও বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘মহুয়া মৈত্রের অত্যন্ত আপত্তিকর, অনৈতিক, জঘন্য এবং অপরাধমূলক আচরণের প্রেক্ষিতে কমিটি (এথিক্স কমিটি) ভারত সরকারের কাছে সুপারিশ করছে যে, তাঁর বিরুদ্ধে যেন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক আইনি তদন্ত করা হয়।’’ এ ছাড়াও এথিক্স কমিটি রিপোর্টে মহুয়া মৈত্র এবং দর্শন হীরানন্দানির মধ্যে নগদ অর্থ লেনদেনের ‘মানি ট্রেইল’-এরও তদন্ত করানোর সুপারিশ করেছে। রিপোর্টে মেনে নেওয়া হয়েছে যে, ওই আর্থিক বিষয়ে তদন্ত করার মতো প্রযুক্তিগত কাঠামো কমিটির নেই। তাই যেন সরকার তার তদন্ত করে।
এ তো গেল মহুয়া সংক্রান্ত বিষয়। কমিটিরই সদস্য কিন্তু ইন্ডিয়া ব্লকের সদস্য দানিশ আলির আচরণেরও নিন্দা করা হয়েছে রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, কমিটির বৈঠকে অসংলগ্ন আচরণ এবং গুজব ছড়ানোর জন্য বহুজন সমাজ পার্টির সাংসদ দানিশ আলিকে সতর্ক করে দেওয়ারও সুপারিশ।
প্রসঙ্গত, গত ২ নভেম্বর এথিক্স কমিটির বৈঠক বসেছিল। মাঝপথেই বৈঠক ভেস্তে যায়। মহুয়া বেরিয়ে এসে অভিযোগ করেন, আলোচ্য সূচির সঙ্গে সম্পর্করহিত বিষয়ে যা তাঁর ব্যক্তিগত পর্যায়ে পড়ে, সেই সব প্রশ্ন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। যার উত্তর দিতে রুচিতে বেধেছিল কৃষ্ণনগরের সদ্য প্রাক্তন সাংসদের। মহুয়ার সঙ্গেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন সদস্যদের একটি অংশ। বিএসপি সাংসদ দানিশও ছিলেন তাতে। তিনিও কমিটির প্রধানের আপত্তিকর প্রশ্নের কড়া নিন্দা করেছিলেন।