পর্যটকশূন্য পরীর সমুদ্রসৈকত। ছবি: সমাজমাধ্য়ম।
সারা বছর ওড়িশার জনপ্রিয় যে সৈকতগুলি পর্যটকদের ভিড়ে থিকথিক করে, সোমবার থেকেই সেই জনপ্রিয় সৈকতগুলির দৃশ্য বদলাতে শুরু করেছে। বুধবারের মধ্যে সেই দৃশ্য আরও বদলেছে। খাঁ-খাঁ করছে সৈকতগুলি। শুধু সমুদ্রের ঢেউ গর্জন করে আছড়ে পড়ছে সৈকতে। নেই কোনও পর্যটক, নেই কোনও শোরগোল। ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’ আসার আগেই পুরী, গোপালপুর, পারাদ্বীপ, চাঁদিপুরের মতো জনপ্রিয় সৈকতগুলির চেহারা অচেনা হয়ে উঠেছে।
এখন এই সৈকতগুলিতে শুধু দেখা মিলছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ), জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) সদস্যদের। সঙ্গে চলছে পুলিশের কড়া নজরদারিও। ‘ডেনা’ মোকাবিলায় পুরোপুরি প্রস্তুত। ইতিমধ্যেই ওড়িশার পর্যটনস্থলগুলি ছেড়ে চলে এসেছেন পর্যটকেরা। সোমবার রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবারের মধ্যেই সমস্ত পর্যটককে ওড়িশা ছাড়তে হবে। তার পর থেকেই এই রাজ্য ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল পর্যটকদের মধ্যে।
মঙ্গলবারের মধ্যেই প্রায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে পুরী, গোপালপুর এবং চাঁদিপুরের মতো জনপ্রিয় পর্যটনস্থল এবং সৈকতগুলি। ফলে ‘ডেনা’ আতঙ্কে দু’দিনের মধ্যেই ওড়িশার পর্যটনস্থল এবং সৈকতগুলির চেহারা একেবারে বদলে গিয়েছে। পর্যটকদের বদলে এখন এই সৈকতগুলি দখল নিয়েছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং পুলিশ।
বুধবার থেকে তিন দিন পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গঞ্জাম জেলার গোপালপুর এবং সুনাপুর সৈকত। আবার পারাদ্বীপ এবং সিয়ালি সৈকতেও পর্যটকদের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জগৎসিংহপুর জেলা প্রশাসন। ‘ডেনা’র জেরে সমুদ্রের ঢেউ ৭-৮ ফুট পর্যন্ত উঠতে পারে। ফলে ওই সময়ে সৈকতের ধারেকাছে যেন কোনও পর্যটক ঘেঁষতে না পারেন, তার জন্য নজরদারি চালানো হচ্ছে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। আছড়ে পড়ার সময় গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। সর্বাধিক গতি পৌঁছতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। বর্তমানে ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ২৮০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ‘ডেনা’। ধামারা থেকে ৩১০ কিলোমিটার এবং সাগরদ্বীপ থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দূরে।