রেলের ওই রক্ষণাবেক্ষণের উদাসীনতার শিকার হয়েছেন মুখতার আলি নামে এক ট্রেন যাত্রী। ছবি : টুইটার।
ট্রেনের ভাঙা সিটে বসতে গিয়ে গুরুতর শারীরিক আঘাত পেলেন এক রেলযাত্রী। সেই ঘটনা এবং তাঁর যন্ত্রণার কথা তিনি ছবি-সহ জানিয়েছেন ভারতীয় রেলকে। অনুরোধ করেছেন, ভবিষ্যতে আর কেউ যেন ট্রেন সফরে বেরিয়ে তাঁর মতো ভোগান্তির শিকার না হন। রেল সেই অনুরোধের পাল্টা জবাবও দিয়েছে যাত্রীকে।
টুইটারে ভারতীয় রেলের নাম উল্লেখ করে এই অভিযোগ করেছিলেন যাত্রী। রেলও টুইট করেই তার উত্তর দিয়েছে। সেই কথোপকথন সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় রেল। ট্রেনের ভাঙা সিট থেকে শুরু করে অপরিষ্কার শৌচাগার এমনকি দূরপাল্লার গাড়িতে সার্বিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে রেলযাত্রীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ সে বিষয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে আলোচনা। ট্রেনগুলির রক্ষণাবেক্ষণে ভারতীয় রেলের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটাগরিকেরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেলযাত্রীকে সমবেদনাও জানিয়েছেন অনেকে।
রেলের ওই ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতা’র শিকার হয়েছেন মুখতার আলি নামে এক ট্রেন যাত্রী। পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মুখতার গত ১ মে সফর করছিলেন দূরপাল্লার ট্রেনে। উত্তরাঞ্চল ক্রান্তি এক্সপ্রেসে সি-২ কামরায় সংরক্ষিত আসন ছিল তাঁর। ঘটনাটি ঘটে ট্রেনে উঠে আসনে বসার সঙ্গে সঙ্গেই।
ট্রেনের চেয়ারের হাতল ভেঙে বেড়িয়েছিল একটি সরু লোহার রড। সম্ভবত সেটি খেয়াল না করেই তার উপর বসে পড়েছিলেন মুখতার। তার পর যা হওয়ার হয়। মুখতার টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ভারতীয় রেল পরিষেবাকে বলব, এই ভাঙা হাতলের রডটা দেখুন, এটাতে আমার প্যান্ট তো ছিঁড়েইছে, তার সঙ্গে আমার নিতম্বকেও জখম করেছে এই ভাঙা হাতল।’’ নিজের আসনের সংখ্যা এবং কামরার সংখ্যা জানিয়ে মুখতার ভারতীয় রেলকে অনুরোধ করেছেন, ‘‘দয়া করে এটা ঠিক করুন। এটা মারাত্মক বিপজ্জনক।’’
ভারতীয় রেলের যাত্রী স্বাচ্ছন্দের দেখভালকারী রেল সেবা অবশ্য ওই দিনই মুখতারের টুইটের জবাব দিয়েছে। ধারাবাহিক দু’টি টুইটের একটিতে তারা জানতে চেয়েছে রেলযাত্রীর পিএনআর নম্বর। পরের টুইটে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট এবং ভারপ্রাপ্ত রেল অধিকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের ইজ্জতনগরের ডিভিশন রেলওয়ে ম্যানেজারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে বলেও জানায় রেলসেবা।
তবে মুখতারের ঘটনায় নেটাগরিকেরা বলেছেন, এই ঘটনায় আরও একবার স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিল, কেন রেলের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। যে ট্রেনে সারা ভারতে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন, তা নিয়ে সামান্য উদাসীনতাও মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।