কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। ফাইল চিত্র।
নিউজ়ক্লিককাণ্ডে দিল্লি, নয়ডা, গাজ়িয়াবাদ, গুরুগ্রাম এবং মুম্বইয়ে একশোরও বেশি জায়গায় মঙ্গলবার তল্লাশি অভিযান চালায় দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। তল্লাশি চালানো হয়ে এই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত থাকা বেশ কিছু সাংবাদিক, কর্মীদের বাড়িতেও। ৫০০ পুলিশকর্মীকে নিয়ে যখন সাংবাদিকদের বাড়িতে একের পর এক তল্লাশি চালানো হচ্ছে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
দিল্লি পুলিশ যখন রাজধানী এবং আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে, সেই সময় ভুবনেশ্বরে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ। সেখানেই এক সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে এই তল্লাশি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, কেউ যদি দোষ করে থাকে, তা হলে তদন্ত হতেই পারে। সুতরাং এই তদন্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য করার যৌক্তিকতা আছে বলে তাঁর মনে হয় না। তিনি বলেন, “এ তল্লাশি প্রসঙ্গে মন্তব্য করাটা যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করি না। যদি কেউ দোষ করে থাকেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। এটা কোথাও লেখা নেই যে, আপনার কাছে অবৈধ ভাবে টাকা আসছে, বেআইনি কাজের সঙ্গে জড়িত হওয়ার পরেও আপনার বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত হবে না! তদন্তকারী সংস্থা আইন মেনেই তদন্ত করে।”
মঙ্গলবার সকাল থেকেই দিল্লি পুলিশের তল্লাশি অভিযান চলছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৭ অগস্ট ইউএপিএ আইনে মামলা রুজু হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেটও (ইডি) একটি মামলা রুজু করে। তদন্তকারী সংস্থার কাছ থেকে তথ্য পেয়েই তল্লাশি অভিযানে নামে দিল্লি পুলিশ। বেশ কিছু সাংবাদিক সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, দিল্লি পুলিশ তাঁদের ল্যাপটপ এবং ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে। অনেকেই এই তল্লাশি অভিযানকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে সমালোচনা করেছেন। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বলেও অভিযোগ উঠেছে। দ্য প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া এই তল্লাশি প্রসঙ্গে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা ‘ডিফেন্ডমিডিয়াফ্রিডম’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে শুরু করেছে। একটি বিবৃতি জারি করেছে প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, নিউজ়ক্লিক-এর সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিক এবং লেখকদের বাড়িতে এই তল্লাশি খুবই উদ্বেগের। তারা এই গোটা বিষয়টির উপর নজর রাখছে।
দিল্লি পুলিশের এক সূত্রের খবর, সোমবার এই তল্লাশি নিয়ে স্পেশাল সেলের শীর্ষ আধিকারিকেরা বৈঠকে বসেছিলেন। কী ভাবে, কোথায়, কখন অভিযান চালানো হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয় ওই বৈঠকে। পরিকল্পনামতো মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকেই দিল্লি, নয়ডা, গাজ়িয়াবাদ, গুরুগ্রাম এবং মুম্বইয়ে একশোটিরও বেশি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। এই তল্লাশি অভিযানে মোতায়েন করা হয়েছিল ৫০০ পুলিশকর্মীকে। ওই সূত্রের খবর, যাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে তাঁদের তিনটি ক্যাটেগরিতে (এ, বি, সি) ভাগ করা হয়েছিল। ‘এ’ ক্যাটেগরি তালিকায় থাকাদের আটক করা হয়েছে। নিউজ়ক্লিক-এর প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থকে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে।