(বাঁ দিকে) প্রজিশ। ওয়েনাড়ের ধস (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
তিনি নিজে ১০০ জনকে বাঁচিয়েছেন। কিন্তু নিজেই ধসের নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিলেন। আর তাতেই মৃত্যু হয় প্রজিশের। ওয়েনাড়ের চূড়ালমালায় এখন সকলের মুখে মুখে ফিরছে তাঁরই নাম।
বছর ছত্রিশের প্রজিশ পেশায় এক জন শেফ। লিজে এলাচের চাষও করতেন তিনি। সেন্টিনেল রক এস্টেটে থাকতেন প্রজিশ। সেখানে চা-বাগান রয়েছে। সেই বাগানেরই ১০০ জন কর্মীকে ধসের দিন উদ্ধার করেছিলেন প্রজিশ। ১০০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যান। তবে ধসে আটকে থাকা আরও ছ’জনকে উদ্ধার করতে গিয়েই বিপাকে পড়েন তিনি। সেই মুহূর্তে আরও একটি ধস নেমে আসায়, তার নীচেই চাপা পড়ে যান প্রজিশ।
প্রজিশ যে রিসর্টে শেফের কাজ করতেন, সেই রিসর্টেরই এক কর্মী জিতু এম বলেন, “প্রজিশ কখনও নিজের জন্য ভাবেনি। জীবনের তোয়াক্কা করেনি। ধস নামতেই সকলকে সতর্ক করেছিল ও। প্রজিশেরই তৎপরতায় ১০০ জনের জীবন বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু শেষে নিজেই বেঁচে ফিরল না!” চা-বাগানের এক শ্রমিক জানিয়েছেন, প্রজিশ অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। ২৮ জুলাই সারা রাত বৃষ্টি হয়। কিছু একটা আঁচ করতে পরেছিলেন প্রজিশ। তাই চা-বাগানের কর্মী এবং রিসর্টের সকলকেই সতর্ক থাকতে বলেছিলেন। প্রজিশের আশঙ্কাই শেষমেশ সত্যি হয়েছিল।
চা-বাগানের ওই কর্মীর দাবি, ধসের দিন বেশ কয়েকটি বাড়ি থেকে ১০০ জনকে একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান প্রজিশ। রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত— এই দুই ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সকলকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিজের গাড়ি নিয়ে গ্রামের অন্য বাড়িগুলি দেখতে বেরিয়েছিলেন প্রজিশ। সেই সময় প্রথম ধস নেমে আসে। রাত তখন ১টা ৩০ মিনিট। তখনই তিনি একটি বাড়ির সামনে পৌঁছে তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি। আবার একটি ধস নামে। আর সেই ধসেই চাপা পড়ে মৃত্যু হয় প্রজিশের।