ওয়েনাড়ে ধসের ধ্বংসলীলা। ছবি: পিটিআই।
জ্বরে অসুস্থ দুই সন্তানকে ঘুম পাড়াচ্ছিলেন উবেদ। মাঝরাত। আচমকাই বাড়ির দেওয়ালে জোর ধাক্কা। তার পরই সেই দেওয়াল ভেঙে দিয়ে হুড়মুড়িয়ে জল ঢুকে পড়ল। আর সেই জলের স্রোতে একে একে স্ত্রী, মেয়েকে ভেসে যেতে দেখলেন তিনি। উবেদও কিছু একটা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু পারেননি। তিনিও সেই জলের স্রোতে ভেসে যান।
৩০ জুলাই রাতে ধসের ঘটনার কথা বলতে গিয়ে ভেঙে পড়েছিলেন উবেদ। স্ত্রী, এক কন্যা এবং তিনি বেঁচে গেলেও, আর এক কন্যার কোনও খোঁজ পাননি। ওয়েনাড়ের চূড়ালমালার বাসিন্দা উবেদ। দুই সন্তান, স্ত্রী এবং শাশুড়িকে নিয়ে তাঁর সংসার ছিল। কিন্তু ৩০ জুলাইয়ের রাতের সেই ঘটনা তাঁদের ভিটেমাটি ছাড়া তো করেইছে, সেই সঙ্গে বড় কন্যাকেও হারিয়ে এখন দিশাহারা উবেদ।
তাঁর কথায়, “কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব ভেঙেচুরে নিয়ে গেল ধস। বড় মেয়ে, স্ত্রী আর শাশুড়ি ভেসে গেল। পরে জানতে পেরেছি ছোট মেয়ে ঘরের একটি সিলিং ফ্যান আঁকড়ে ধরে ছিল।” বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে গিয়ে আছড়ে পড়েছিলেন উবেদ। ঘটনাচক্রে কয়েক হাত দূরেই তাঁর স্ত্রীকে পাওয়া যায়। দু’জনকেই আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সে দিনের রাতের ভয়াবহ ঘটনার অভিজ্ঞতা এক সংবাদমাধ্যমকে শুনিয়েছেন উবেদ।
গত ৩০ জুলাই রাতে ওয়েনাড়ে ভয়াবহ ভূমিধস নামে। সেই ধসে মুন্ডাক্কাই, চূড়ালমালা, ভেলারিমালা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষের। নিখোঁজ বহু।