লোকসভায় দূষণ নিয়েও রাজনীতি

দিল্লির মতোই দূষণের শিকার দেশের প্রায় ১৫টি শহর। কিন্তু আজ কেবল দিল্লির বায়ু দূষণ নিয়ে আলোচনায় রাজি হয় সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫৮
Share:

ছবি: রয়টার্স।

দিল্লির দূষণ নিয়ে লোকসভায় আলোচনা। তাতে অনুপস্থিত দিল্লির সাত সাংসদের চার জনই। দিন কয়েক আগে দূষণ সংক্রান্ত সংসদীয় বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন পূর্ব দিল্লির সাংসদ গৌতম গম্ভীর। আজ তাঁকে আলোচনার সময়ে বসে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু আর এক সাংসদ প্রবেশ বর্মা নিজের বক্তব্যটুকু রেখে সেই যে উধাও হলেন, আর পাওয়া গেল না তাঁকে। শাসক দলের সাংসদদের এই ভূমিকায় সমালোচনা করেছেন স্পিকার ওম বিড়লাও।

Advertisement

দূষণ প্রশ্নে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক ডাকেন না। উল্টে দূষণের সময় বিদেশ সফরে চলে যান। এই আবহে আজ শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে দিল্লির দূষণ নিয়ে আলোচনা সময় ধার্য করা হয়েছিল লোকসভায়। আজ বেলা ৩.৪০ মিনিটে যখন আলোচনা শুরু হয়, তখন গোটা লোকসভায় ছড়িয়ে-ছড়িয়ে রয়েছেন সাকুল্যে শ’খানেক সাংসদ। ফাঁকা ট্রেজারি বেঞ্চ। অনুপস্থিত অধিকাংশ মন্ত্রী। উপস্থিত কেবল পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। বিতর্ক চলাকালীন মাঝে মধ্যে কক্ষের বাইরে যেতে দেখা যায় তাঁকেও। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা দিল্লির সাংসদ হর্ষবর্ধন উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভায়।

দিল্লির মতোই দূষণের শিকার দেশের প্রায় ১৫টি শহর। কিন্তু আজ কেবল দিল্লির বায়ু দূষণ নিয়ে আলোচনায় রাজি হয় সরকার। কেন গোটা দেশের দূষণ পরিস্থিতি প্রাধান্য পাবে না, সেই প্রশ্ন আজ তুলেছেন আঞ্চলিক দল ডিএমকে সাংসদ কে সুমথি বা তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদারেরা। যদিও সরকারের যুক্তি, দিল্লি যেহেতু দেশের রাজধানী এবং সাংসদদের বছরের একটি বড় অংশ বিভিন্ন কারণে রাজধানীতে থাকতে হয়, তাই দিল্লিকে কেন্দ্র করেই গোটা দেশের দূষণ পরিস্থিতি ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিরোধীদের দাবি, গোটা উদ্যোগটিই রাজনৈতিক। দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার রয়েছে এবং সামনে ভোট—তাই পরিকল্পিত ভাবে দিল্লি দূষণ নিয়ে আলোচনা করতে চায় শাসক পক্ষ।

Advertisement

আরও পড়ুন: কাশ্মীরের স্কুলে হাজিরা নিয়ে কেন্দ্রের বক্তব্যে প্রশ্ন

আজ দিল্লি দূষণের জন্য কেজরী সরকারকে দুষেছেন পশ্চিম দিল্লির বিজেপি সাংসদ প্রবেশ বর্মা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দূষণ রুখতে ব্যর্থ দিল্লি সরকার। কেজরী দায় ঠেলেছেন পঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদের দিকে।’’ প্রবেশের অভিযোগ, বাস্তবে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ হয়নি। কেবল জোড়-বিজোড় যান নীতি নিয়ে ৭০০ কোটি টাকা বিজ্ঞাপনে খরচ করেছেন কেজরী। তাঁর কথায়, ‘‘আপের ভুল নীতির কারণে আগে কেবল কেজরী কাশতেন, এখন গোটা দিল্লি কাশছে।’’

একতরফা আক্রমণ দেখে সরব হন বিরোধী সাংসদেরা। তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘‘বিজেপির ওই সাংসদ সম্ভবত কী বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাই ভুলে গিয়েছেন।’’ আজ মুখে মাস্ক দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন কাকলি। বিজেপি সাংসদ রাজীবপ্রতাপ রুডি আপত্তি জানালে তা খুলে ফেলেন। তাঁর কথায়, ‘‘দিল্লি গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা গাঙ্গেয় অববাহিকায়।’’ এর পর পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘স্বচ্ছ ভারতের মতো স্বচ্ছ হাওয়া মিশন প্রকল্প হাতে নিক সরকার।’’ প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন জাভড়েকর।

পরে একটি অনুষ্ঠানে রাজধানীর সড়ক পরিবহণে সিএনসি চালুর প্রসঙ্গ টেনে সনিয়া গাঁধী বলেন, পরিবেশবিদ সুনীতা নারায়ণের সংস্থার পরামর্শে দিল্লির দূষণ আটকানোর জন্য কংগ্রেস সরকার ওই পদক্ষেপ করেছিল। মঙ্গলবার সুনীতার হাতে ইন্দিরা গাঁধী শান্তি পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement