বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ। ফাইল চিত্র।
জ্ঞানবাপী মসজিদ মামলা এ বার বারাণসী জেলা আদালতে শুনানির জন্য পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিংহের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, বারাণসীর জেলাশাসককে জ্ঞানবাপী মসজিদে আসা নমাজিদের ওজুর (হাত-মুখ ধোয়া) জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
এত দিন জ্ঞানবাপী মামলাটি ছিল বারাণসী দায়রা আদালতে। শুক্রবার জেলা আদালতকে মামলা হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘এমন স্পর্শকাতর মামলার শুনানির জন্য আরও অভিজ্ঞ বিচারবিভাগীয় আধিকারিকের প্রয়োজন।’’
জ্ঞানবাপীর অন্দরে সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির জন্য বারাণসী দায়রা আদালতের সিনিয়র বিচারক রবিকুমার দিবাকরের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন, ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি’-র আইনজীবী হুফেজা আহমদি। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ গত মঙ্গলবার বারাণসী দায়রা আদালতকে নির্দেশ দিয়েছিল, কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদের ওজুখানার জলাধারে তথাকথিত শিবলিঙ্গের (মতান্তরে ফোয়ারা) নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কোনও ভাবেই মসজিদে নমাজ বন্ধ করা যাবে না। শুক্রবার ওজুর জন্য জলের বিকল্প ব্যবস্থা করার কথা বলে, সেই সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালত।
বারাণসী দায়রা আদালত-নিযুক্ত পর্যবেক্ষক দল বৃহস্পতিবার মুখবন্ধ খামে জ্ঞানবাপী মসজিদের অন্দরে সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফি সংক্রান্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট দায়রা বিচারক দিবাকরের কাছে জমা দিয়েছিল। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত মতামতের ভিত্তিতে তৈরি ওই রিপোর্ট নিয়ে শুক্রবার বারাণসী দায়রা আদালতে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট শুনানি স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। শুক্রবার মামলাটি শুনানির জন্য বারাণসী জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়েছিলেন বারাণসী দায়রা আদালতে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই মামলারই এ বার শুনানি হবে বারাণসী জেলা আদালতে। জ্ঞানবাপী মসজিদের জমির মালিকানা দাবি করে হিন্দুত্ববাদীদের তরফে দায়ের করা একটি পৃথক মামলা এখনও বারাণসী দায়রা আদালতে বিচারাধীন।