অঞ্জুর ভাইরাল সেই ভিডিয়োর একটি দৃশ্য। ছবি: টুইটার।
টেবিল ভর্তি খাবার। গোল করে খেতে বসেছেন আট জন পুরুষ। সঙ্গে রয়েছেন এক নারীও। মাথায় বোরখা, কাঁধে ব্যাগ। শান্ত ভাবে চামচ দিয়ে খাচ্ছেন পাকিস্তানি পদ। তাঁকে নিয়ে যে ভারত এবং পাকিস্তান— দু’দেশে এত হইচই, এত উত্তেজনা, তা তাঁকে দেখে বোঝা দায়। তিনি ভারতীয় গৃহবধূ অঞ্জু। যিনি পরিবারকে লুকিয়ে ফেসবুকের ‘বন্ধু’র সঙ্গে দেখা করতে পাড়ি দিয়েছেন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে। অঞ্জু পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় পৌঁছনোর পর ‘বন্ধু’ নাসেরুল্লাহকে বিয়ে করেছেন বলে পাক সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি। তিনি ধর্ম পরিবর্তন করেছেন বলেও দাবি করেছে পাক সংবাদমাধ্যমগুলি।
সেই অঞ্জুরই একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে তাঁকে নাসেরুল্লাহের পাশে বসে একটি রেস্তরাঁতে নৈশভোজ করতে দেখা গিয়েছে। অঞ্জু এবং নাসিরুল্লাহ ছাড়াও সেই ভিডিয়োতে আরও জনা সাতেক যুবককে খেতে দেখা গিয়েছে। টুইটারে পাকিস্তানের এক সাংবাদিক সেই ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন। ভিডিয়োতে অঞ্জুকে বোরখা পরে খাবার খেতে দেখা গিয়েছে। পাশে টুপি পরে বসে খাবার খেতে দেখা গিয়েছে নাসেরুল্লাহকেও। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রসঙ্গত, ৩৪ বছর বয়সি অঞ্জুর জন্ম উত্তরপ্রদেশের কাইলোর গ্রামে। বিয়ের পর থাকতেন রাজস্থানের আলওয়ার জেলায়। ২০১৯ সালে ফেসবুকে নাসেরুল্লাহের সঙ্গে আলাপ হয় অঞ্জুর। সেই বন্ধুর টানেই স্বামী, দুই সন্তানকে ছেড়ে তিনি পাকিস্তানে পাড়ি দিয়েছেন। যুগলের বেশ কয়েকটি ছবিও ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও সেই সব ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সেই সব ছবি এবং তথ্য ইতিমধ্যেই সকলের নজর কেড়েছে। এর নেপথ্যে কোনও গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে, না কি এর নেপথ্যে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের হাত রয়েছে— সেই প্রশ্নও ভাবাতে শুরু করেছে।
অন্য দিকে, পাকিস্তান থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করে হইচই ফেলে দিয়েছেন পাক ‘বধূ’ সীমা হায়দার। প্রশ্ন উঠছে ভারত থেকে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়াতে যাওয়া অঞ্জুকে নিয়েও। ঘর সংসার ছেড়ে সীমান্ত পার করেছেন দু’জনেই।
সীমার ভারতে অনুপ্রবেশ নিয়ে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। জট ছাড়াতে তদন্তে নেমেছে উত্তরপ্রদেশ এটিএস এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। সীমা আসলে কে? ভারতীয় প্রেমিকের টানে সীমান্ত পার করে আসা সাধারণ বধূ, না পাক গুপ্তচর, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সীমা পাকিস্তানের কোনও চর কি না, তার তদন্তই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এটিএসের কাছে। তার মধ্যেই ভাবাতে শুরু করেছে পাকিস্তানে যাওয়া ভারতীয় বধূ অঞ্জুর ঘটনায় ওঠা নানা প্রশ্নও।
অঞ্জুর বাবা গয়াপ্রসাদ থমাস দাবি করেছেন যে, তাঁর মেয়ে ‘মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত এবং ভারসাম্যহীন’। মেয়ের সঙ্গে বিগত বহু বছর ধরে তাঁর সম্পর্ক নেই। কাউকে না জানিয়ে পাকিস্তানে যাওয়া মেয়ের ভুল বলেও তিনি জানিয়েছেন। এ-ও জানিয়েছেন, অঞ্জু তাঁর কাছে ‘মৃত’। যদিও অঞ্জুর স্বামী অরবিন্দের আশা, ‘স্ত্রী ঠিক ফিরবে’।