শিক্ষকের ভূমিকায় পুলিশ কর্মী। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
করোনাভাইরাসের অতিমারিতে গোটা বিশ্ব যেন এক প্রকার থেমে গিয়েছে। আর এই অচলাবস্থা সম্ভবত শিশুদের সব থেকে বেশি সমস্যায় ফেলেছে। এক দিকে স্কুল বন্ধ, সেই সঙ্গে বাইরে বেরতেও পারছে না তারা। আবার এদের মধ্যে যে সব স্কুলে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে, তেমন নয় বা যে শিশুদের স্মার্টফোন, ল্যাপটপ নেই, তারা সব দিক থেকেই যেন পিছিয়ে পড়ছে। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন যাঁরা নিজেদের দৈনন্দিন ডিউটির পাশাপাশি সমাজের জন্য আরও কিছু করতে চান। তাই এমন শিশুদের কথা ভেবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বেঙ্গালুরুর এক সাব-ইনস্পেক্টর। তাই লড়াইয়ের কাহিনি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
সংবাদ সংস্থা এএনআই ইউটিউবে ভিডিয়োটি আপলোড করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক পুলিশ কর্মী বস্তিতে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। তাঁদের শিশুদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচেই খাতা, বই নিয়ে স্কুল খুলে দিয়েছেন। চলছে পড়াশোনা। উর্দিধারী এই শিক্ষকের নাম শান্তাপ্পা জাদেমানাবর। তিনি বেঙ্গালুরুর অন্নপূর্ণেশ্বরী নগর থানার সাব-ইনস্পেক্টর পদে রয়েছেন।
শান্তাপ্পা এখন রোজ সকাল সাতটায় বাড়ি থেকে ডিউটির জন্য বের হন। তবে থানায় রিপোর্ট করার আগে পৌঁছে যান বেঙ্গালুরুর পশ্চিমে নগরভাবি এলাকায়। সেখানে প্রায় ৩০ জন শিশু তাঁর জন্য অপেক্ষা করে থাকে। বস্তিরই এক কোণে তাঁদের জন্য খুলে ফেলেছেন স্কুল। গত ২০ দিন ধরে তিনি এই কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন শান্তাপ্পা। স্কুল শেষ করার পর তিনি দৈনন্দিন ডিউটির জন্য থানায় রিপোর্ট করেন।
আরও পড়ুন: মেক্সিকোয় এয়ারপোর্ট নির্মাণ করতে গিয়ে বেরিয়ে এল দৈত্যাকার প্রাণীদের কঙ্কাল
শান্তাপ্পা জানিয়েছেন, মূলত কর্নাটকের উত্তরের বল্লারি, কোপ্পাল, রায়চুর, গদগ জেলার বাসিন্দা এই শ্রমিকরা। যাঁরা বেঙ্গালুরু শহরে এসেছেন কাজ করতে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তাঁরাও যেমন সমস্যা পড়েছেন, তাঁদের সন্তানরা দৈর্ঘদিন স্কুল থেকে দূরে। তাই তাদের কথা ভেবে এই পাঠশালা খুলেছেন তিনি। তবে এখানে স্কুলে যেমন সব বিষয়ের উপর আলাদা আলাদা শিক্ষকরা পাঠ দেন, তাঁর একার পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বদলে তিনি তাঁর এই পাঠশালায় চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির পডু়য়াদের এক সঙ্গে বসিয়ে সাধারণ জ্ঞান, গণিত-সহ আরও কিছু বিষয় পড়াচ্ছেন।
আরও পড়ুন: মজার মুডে থাকা এই সুপারস্টারদের দেখুন তো চিনতে পারেন কি না!
শুধু বস্তির মানুষই নয় শান্তাপ্পার এই উদ্যোগ নেটাগরিকদের কাছে প্রচুর প্রশংসা কুড়াচ্ছে। এমনকি কর্নাটকের শিক্ষামন্ত্রীর কানেও পৌঁছেছে এই পুলিশ কর্মীর এমন উদ্যোগের কথা। সে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এস সুরেশ কুমার সম্প্রতি একবার এই স্কুলে ঘুরেও গিয়েছেন। তিনিও শান্তাপ্পার এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
দেখুন সেই ভিডিয়ো: