ছাত্রদের মাঝে নন্দা স্যার। টুইটার থেকে নেওয়া ছবি।
নন্দা প্রাস্তে নামের এক বৃদ্ধ, ওড়িশার এক গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে একটি স্কুল চালান। গ্রামের মানুষের দাবি নন্দা প্রায় ৭৫ বছর ধরে এখানে পড়াচ্ছেন। তবে আজ পর্যন্ত কারও কাছ থেকে একটি পয়সাও নেননি। ওড়িশার জাজপুর জেলার এমনই এক ঘটনা সামনে এল। জাজপুরের বারতান্ডা নামের একটি গ্রামের বাসিন্দা নন্দার স্কুলে শুধু ছোটরা নয়, পাঠ নেন বড়রাও। সকালে শিশুদের নিয়ে ক্লাস করেন, সন্ধ্যায় বড়দের জন্য। গ্রামের সবার কাছে তিনি নন্দা স্যার।
নন্দার কাছে এই স্কুল জীবন ধারণের আধার নয়, শিক্ষার প্রতি তাঁর ভালবাসা থেকেই তিনি এই কাজ করেন। বারতন্ডা গ্রামের সরপঞ্চ নন্দাকে একাধিক বার অনুরোধ করেছেন, যাতে সরকারি অনুদান নিয়ে এই স্কুল চালান তিনি। কিন্তু নন্দা বার বার সেই অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছেন। নন্দা জানিয়েছেন, তিনি বদ্ধ ঘরের থেকে প্রাচীন ওই গাছের নীচে বসে পড়াতেই বেশি ভালবাসেন।
সরপঞ্চের দাবি, নন্দা স্যার প্রায় ৭৫ বছর ধরে এই স্কুল চালাচ্ছেন। তবে তাঁর বয়স কত কেউ সঠিক বলতে পারেন না। কেউ বলেন ৯০ কেউ বা দাবি করেন ৯৫ বছর।
আরও পড়ুন: কোভিড সেন্টারে কনে আর মসজিদে বর, নিকাহ হল আনন্দেই
নন্দা তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে গিয়ে জানিয়েছেন, কৃষিকাজই তাঁর পেশা। আর সেখানে তিনি দেখেছেন বহু মানুষ পড়াশোনা, এমনকি নিজেদের নাম টুকুও সই করতে জানেন না। নন্দা তাঁদের বলতেন, তাঁর স্কুলে গিয়ে যেন অন্তত নাম সইটা শিখে নেন। কিন্তু শেষে দেখা যায় তাঁরা পড়াশোনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। এবং এখন তাঁরা নিজেরাই ভগবত গীতা পড়তে পারেন। নন্দা আরও জানিয়েছেন, তিনি প্রথম যে ব্যাচকে পড়িয়েছিলেন এখন তাঁদের নাতির ছেলেরা এই স্কুলের ছাত্র।
আরও পড়ুন: স্কুল বন্ধ, লেখাপড়া নয়, দেখিয়ে দিল ঝাড়খণ্ডের গ্রাম
গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, নন্দা বার বার সরকারি সাহায্য ফিরিয়ে দিলেও তাঁরা ঠিক করেছেন, অন্তত একটি ছাদের ব্যবস্থা করবেন যাতে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা বিনা বাধায় এই স্কুল চলতে পারে।