অশান্ত মণিপুর। —ফাইল চিত্র।
পুরো একটা বছর পেরিয়েও মণিপুরে থামেনি রক্তপাত। ঘরছাড়া এখনও প্রায় সত্তর হাজার মানুষ। নিহতের সংখ্যা ২২০ ছুঁয়েছে। সরকার হোক বা পুলিশ, সেনা বা আধাসেনা, কেউ জানে না, সংঘাতের শেষ কোথায়! তার মধ্যেই রাজ্যে লোকসভা ভোটও হয়ে গেল। শরণার্থী শিবিরে থাকা পরিবারগুলির অনেকেই ভোট বয়কট করেছেন। সংঘাতে মলম লাগাতে একটি বারের জন্যেও রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর পা না পড়ায় দু’পক্ষই ক্ষুব্ধ।
সংঘর্ষের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৩ মে কুকি এলাকায় পালিত হচ্ছে ‘কালা দিবস’। ঘোষণা হয়েছে সর্বাত্মক বন্ধ। সব কুকি বাড়িতে উড়বে কালো পতাকা। মেইতেইরা দিনটিকে চিন-কুকি মাদক সন্ত্রাসীদের মণিপুর আক্রমণের বর্ষপূর্তি হিসেবে পালন করার ঘোষণা করেছে। শুক্রবার দিল্লির যন্তরমন্তরে মেইতেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে একটি সমাবেশ করবেন কুকি-জো গোষ্ঠীর কিছু সদস্য।
কুকিদের হাত থেকে সংরক্ষিত অরণ্য পুনর্দখলের চেষ্টায় উত্তেজনার সূত্রপাত। পরে মেইতেইদের এসটি মর্যাদা দেওয়া প্রসঙ্গে হাই কোর্টের একটি নির্দেশকে কেন্দ্র করে ৩ মে জনজাতিদের ডাকা মিছিল থেকে সংঘর্ষ শুরু। আপাতত কুকি ও মেইতেই এলাকার মধ্যে সেতুবন্ধন করছেন মুসলিম পাঙ্গালরা।
সাত বিজেপি বিধায়ক-সহ রাজ্যের ১০ জন কুকি বিধায়কের মধ্যে দুই মন্ত্রীও আছেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে গত এক বছর সরকার বা মন্ত্রিসভার সম্পর্ক নেই। পৃথক কেন্দ্রশাসিত কুকিল্যান্ডের দাবিতে সরব কুকিরা। যে দাবিকে ক্রমাগত মদত দিচ্ছেন মিজ়োরামের মুখ্যমন্ত্রী জ়োরামথাঙ্গা। কুকিদের থেকে মেইতেইদের ‘রক্ষার’ নামে মেইতেই যুবকরা ‘আরাম্বাই টেঙ্গল’ নাম দিয়ে জঙ্গি বাহিনী গড়ে রাজ্যের বিজেপি সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় ঢালাও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে কার্যত সমান্তরাল সরকার চালাচ্ছে। এমন অরাজকতা স্বাধীন ভারতে বেনজির। এক সেনাকর্তার মতে, মণিপুরে মাদক-সাম্রাজ্যের কারবার রাজ্যের জিডিপি-র দেড়গুণ। সেই সাম্রাজ্যের দখল নিতেই লড়াই। মায়ানমারের মাদক-মাফিয়াদের মারফৎ চিনেরও হস্তক্ষেপও ঘটেছে।