সুবোধ ঘোষ।
সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর অল্প বয়স থেকেই। তার জন্য পরিশ্রমের ত্রুটি ছিল না। স্টার পেয়ে পাশ করেছিলেন উচ্চ মাধ্যমিক। স্কুলমাঠে সকাল-সন্ধ্যা দৌড় অভ্যাস করতেন। চেষ্টা বৃথা যায়নি। চাকরিও পেয়েছিলেন দ্রুত। টাকা জমিয়ে বাড়ি দোতলা করেছিলেন। কিনেছিলেন নতুন মোটরবাইক। কিন্তু সব চেষ্টা, সব স্বপ্ন বড় তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল বলে আফশোস যাচ্ছে না নদিয়ার তেহট্টের রঘুনাথপুর গ্রামের মানুষের।
বৃহস্পতিবার উত্তর কাশ্মীরের বারামুলার উরি সেক্টরে পাক সেনার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে এই গ্রামের ছেলে, সেনাকর্মী সুবোধ ঘোষ। খবর এসেছিল শুক্রবার। এখন তাঁর কফিনবন্দি দেহ ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছে পরিবার-সহ গোটা গ্রাম।
সেনাবাহিনীতে গানার হিসাবে ৫৯ মিডিয়াম রেজিমেন্ট বারামুলা সেক্টরে কর্মরত ছিলেন। মেয়ে হওয়ার খবর পেয়েছিলেন ফোনে। ভিডিয়ো কলে তাকে দেখেছিলেন কিন্তু ছুঁয়ে দেখা হয়নি। তা আর হবেও না। তিনিই মেয়ের নাম রেখেছিলেন সুরভি। ইচ্ছা ছিল, ডিসেম্বরে ছুটিতে বাড়ি এসে মেয়েকে সামনাসামনি দেখার পাশাপাশি অন্নপ্রাশন দেবেন। সে ইচ্ছা অপূর্ণই থাকল।
ভাইফোঁটার ঠিক আগে এমন দুঃসংবাদ কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না বোন পলি ঘোষ। ভেঙে পড়েছেন তাঁর বন্ধুরাও। শনিবার সকাল থেকেই রঘুনাথপুর এলাকায় রাস্তার পাশে জাতীয় পতাকার সঙ্গে সুবোধের ছবি ও তাঁর নামে ব্যানার লাগিয়েছেন তাঁরা।শনিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁর বাড়ি গিয়ে সমবেদনা জানিয়েছেন।