মান্ডি জেলায় সেতু ভেসে যাওয়ার মুহূর্তের ছবি। ছবি: টুইটার।
ভেসে যাচ্ছে গাড়ি, রাস্তা, সেতু, দোকানপাট। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে চাষের জমি। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বহু রাস্তা। প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশে সর্বত্র চোখে পড়ছে এই একই চিত্র। বিগত কয়েক দিন ধরে সে রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মৌসম ভবনের তরফে হিমাচলের সাত জেলায় লাল সতর্কতা এবং তিন জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় হড়পা বান এবং ভূমিধসের সতর্কতাও জারি করেছে মৌসম ভবন। হিমাচলের বৃষ্টিতে এখনও পর্যন্ত ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে।
হিমাচলে ভারী বর্ষণের কারণে প্রায় সব জেলা় ক্ষতির মুখে পড়েছে। হড়পা বানে ভেসে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। হড়পা বানের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে মান্ডির পঞ্চবক্তা সেতু। মান্ডির অতিরিক্ত জেলাশাসক অশ্বিনী কুমার জানিয়েছেন, বিতস্তা নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় কারণেই ঐতিহ্যবাহী এই সেতুটি ভেসে গিয়েছে। অন্য দিকে, ইরাবতী নদীর স্রোতে চাম্বার বাকান সেতুও ভেঙে গিয়েছে।
বৃষ্টিতে ভূমিধসের কারণে হিমাচলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। কুমায়ুন হিমালয়ে অবিরাম বৃষ্টির কারণে ভূমিধসে টনকপুর-পিথোরাগড় রুটের জায়গায় জায়গায় রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই ৯ নম্বর জাতীয় সড়ক পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে কাজে হাত লাগিয়েছেন রাস্তায় আটকে পড়া যাত্রীরাও। এখনও পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের কারণে মোট ৭৬৫টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
মানালিতে দোকানপাট এবং কুলু, কিন্নর এবং চাম্বাতে হড়পা বানে যানবাহন ভেসে যাওয়ার বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। কসৌলে নদীর জলের স্রোতে একটি যাত্রিবাহী বাসের ভেসে যাওয়ার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
সরকারের তরফে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু অবিরাম বৃষ্টির মধ্যে মানুষকে বাড়ির ভিতরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। পাশাপাশি সরকারের তরফে বেশ কয়েকটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। সুখু একটি ভিডিয়ো বার্তায় বলেছেন, “আমি হিমাচলের জনগণকে অনুরোধ করছি আগামী ২৪ ঘণ্টা আপনারা বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। কারণ, আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা ৩টি হেল্পলাইন নম্বর ১১০০, ১০৭০ এবং ১০৭৭ খোলা রেখেছি। যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে এই নম্বরগুলিতে ফোন করতে পারেন সাধারণ মানুষ।’’ সোম এবং মঙ্গলবার রাজ্যের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে হিমাচল সরকার।
হিমাচল প্রদেশের পাশাপাশি ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, পঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীরের মতো উত্তর ভারতের বিভিন্ন এলাকা। ইরাবতী, বিপাশা, শতদ্রু, সাওয়ান, চন্দ্রভাগা-সহ বেশ কিছু নদীর জলস্তর বাড়ছে।