Mamata Banerjee

রাহুল ‘ইতিহাস’ জানানোর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মমতার সঙ্গে জোট চাইলেন মইলি! কোন খাতে বইছে কংগ্রেস?

মেঘালয়ের জনসভায় তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। কার্যত বিজেপির বি টিম হিসাবে তুলনা করেছিলেন তৃণমূলের। সেই দলের সঙ্গেই জোট চেয়ে বসলেন প্রবীণ নেতা বীরাপ্পা মইলি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রায়পুর শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:৫৫
Share:

মমতার সঙ্গে জোট চাইলেন কংগ্রেসের নেতা। — ফাইল ছবি।

জোট চাই, না চাই না! এখন এই প্রশ্নেই তোলপাড় দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। রায়পুরে মহাঅধিবেশন শুরুর আগেও যা মাথাচাড়া দিল প্রবীণ এক কংগ্রেস নেতার কথায়। তিনি বীরাপ্পা মইলি। স্পষ্ট জানালেন, মমতার সঙ্গে জোট বাঁধতে চায় কংগ্রেস। অথচ ঠিক ৪৮ ঘণ্টা আগে মেঘালয়ের জনসভায় এই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ব্যঙ্গের সুরে তৃণমূলকে বিঁধেছিলেন। জনতাকে পড়িয়েছিলেন, তৃণমূলের ইতিহাস!

Advertisement

ঠিক দু’দিন আগে কংগ্রেস বনাম তৃণমূল মল্লযুদ্ধ এক নতুন খাতে বওয়া শুরু করেছিল দুই শিবিরের সর্বময় নেতানেত্রীর কল্যাণে। যদিও লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক শুরুটা হয়েছিল গোয়ায় বিধানসভা ভোটের সময়। তার পর যত সময় গড়িয়েছে, ক্রমশ তলানিতে এসে ঠেকেছে দুই দলের পারস্পরিক সম্পর্ক। আমন্ত্রণ পেয়েও তৃণমূলের কোনও নেতা রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রায় শামিল হননি।

বুধবার মেঘালয়ে ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন মমতা এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একই দিনে মেঘালয়ে প্রচার করছিলেন রাহুলও। দুই পৃথক মঞ্চ থেকে একে অপরকে কটাক্ষই করেছেন মমতা এবং রাহুল। মমতা বলেন, ‘‘কংগ্রেস ভোট চাইছে! তাদের কোনও নৈতিক অধিকার আছে?’’ তৃণমূলকেই ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান মমতা। তার জবাবে কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে রাহুল বলেন, ‘‘আপনারা তৃণমূলের ইতিহাস জানেন। পশ্চিমবঙ্গে হিংসার কথা জানেন। ওরা গোয়ায় গিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল বিজেপিকে সাহায্য করা। মেঘালয়েও তা-ই।’’ মেঘালয়ে ভোটের প্রচারে গিয়ে কংগ্রেসের মতাদর্শ নিয়ে বক্রোক্তি শোনা গিয়েছিল অভিষেকের ভাষণেও। বস্তুত, রাহুল ভোটের প্রচারে তৃণমূল সম্পর্কে ওই মন্তব্য করার পর তাঁকে কড়া আক্রমণ করে টুইট করেন অভিষেক। এই আবহে দলের মহাঅধিবেশন উপলক্ষে কংগ্রেস নেতৃত্ব জড়ো হয়েছেন রায়পুরে। সেখানে ২০২৪-এর লোকসভা ভোট নিয়ে দলের লাইন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার কথা। সেই কর্মসূচির আগেই জোট নিয়ে ইতিবাচক সুর শোনা গেল মইলির গলায়।

Advertisement

কংগ্রেসের রাজনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারপার্সন মইলি বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত সমস্যার সমাধান করব এবং মমতা, নীতীশ কুমার এবং কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে কাজ করব। জোটের নেতৃত্বদানে আমাদের প্রয়োজন এবং আমরা একসঙ্গে কাঁধে কাধ মিলিয়ে কাজ করব। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে সবাইকে যেন এক ছাতার তলায় আনা যায়। কংগ্রেসকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে হবে এবং একমাত্র যখন আমরা শক্তিশালী হব, তখনই আমরা নেতৃত্ব দিতে পারব।’’

তৃণমূলকে নিয়ে রাহুলের মন্তব্যকে কী চোখে দেখছেন, এই প্রশ্ন করা হয়েছিল মইলিকে। তার জবাবে প্রবীণ নেতা বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধী আমাদের সম্পদ। আমি গত ৬০ বছর ধরে কংগ্রেস করছি। কংগ্রেসের দুর্বলতা এবং শক্তি কী কী তা আমরা জানি। আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’’ কিন্তু একই দলের দুই নেতার দু’রকম মন্তব্যে বিভ্রান্তি বাড়ছে।

রাহুলের দলকে নিয়ে তৃণমূল বা আপের প্রধান আপত্তির জায়গা হল, কংগ্রেসের মনোভাব। বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও আলোচনা ছাড়াই কংগ্রেসকে এগিয়ে যেতে দিতে তারা নারাজ। বিভিন্ন সময় যে উষ্মা প্রকাশ্যেও এসেছে। আবার তৃণমূল বা আপের মতো দলকে ছাড়া বিরোধী জোটের দানা বাঁধাও কার্যত অসম্ভব। কারণ, ভোটের পাটিগণিত বলছে, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে মমতা বা কেজরীওয়ালের ‘স্ট্রাইক রেট’-এর ধারেকাছে নেই কংগ্রেস। তাই মমতাকে ছাড়া বিরোধী জোট বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে বলে মনে করছেন না অনেকেই। এই প্রেক্ষিতে মইলির মন্তব্য কি রাহুল-ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা? প্রশ্ন উঠছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement