সচিন পাইলটকে বিজেপিতে আগাম স্বাগত জানিয়েও মুখ খুললেন না বসুন্ধরা রাজে। —ফাইল চিত্র।
ঠিক ছিল, আজ সকালে রাজস্থানে বিজেপি নেতৃত্বের বৈঠক হবে। কিন্তু তা বাতিল হয়ে যায়। ঢোলপুরের মহারাণী বিজেপি নেত্রী বসুন্ধরা রাজে তাঁর ঢোলপুরের প্রাসাদেই বসে রইলেন। জয়পুরমুখো হলেন না। দলের অন্য নেতাদের মতো তিনিও সচিন পাইলটকে বিজেপিতে আগাম স্বাগত জানিয়েও মুখ খুললেন না।
রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের এই নীরবতা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সচিনকে দলে টানতে চাইলেও তিনি কি এতে খুশি নন? এই মরু রাজ্যের রাজনীতিতে সচিনের উত্থান বসুন্ধরা রাজে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেই। বস্তুত আজও সচিন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের সমালোচনা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘বসুন্ধরার মতোই আচরণ করছেন গহলৌত।’’ সচিন অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না। কিন্তু তিনি যোগ দিলেও বসুন্ধরা তাতে খুশি হবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ, রাজস্থানে বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে বসুন্ধরার প্রভাবই বেশি। সচিন যদি বিজেপিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হতে চান, তা বসুন্ধরা স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নেবেন না।
রাজনীতিকদের ব্যাখ্যা, মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই বিপদ ছিল। কিন্তু সেখানে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একটি লক্ষ্য ছিল, মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের একচ্ছত্র আধিপত্য কাটছাঁট করা। সিন্ধিয়া আসার পরে তাঁর অনুগামীরাই শিবরাজের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন। আবার রোজকার বিবাদ ঠেকাতে সিন্ধিয়াকে রাজ্যে না-রেখে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সচিন শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে যোগ দিলে তাঁকেও কেন্দ্রে মন্ত্রী করে নিয়ে আসা হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
আরও পড়ুন: পাইলটকে দলে রাখতে আসরে রাহুল, সতর্ক করা হল গহলৌতকে
এর আগেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজস্থানের রাজনীতিতে বসুন্ধরার আপত্তি অগ্রাহ্য করতে পারেননি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতকে রাজ্য সভাপতি করতে চাইলে বসুন্ধরা তাতে আপত্তি তোলেন। ৭১ দিনের টানাপোড়েনের পর অন্য এক জনকে রাজস্থানে রাজ্য সভাপতি করা হয়। পরে শেখাওয়াতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করে।
বিজেপিতে গেলে সচিনকে সমস্যার মুখে পড়তে হবে বুঝে আজ কংগ্রেসের নেতারা তাঁর উপরে আরও চাপ তৈরি করেছেন। গহলৌত তো বটেই, তরুণ গগৈর মতো প্রবীণ নেতারাও মন্তব্য করেছেন, দলে যাঁরা তৃণমূলস্তর থেকে উঠে না এসে সাংসদ, রাজ্য সভাপতি হচ্ছেন, তাঁদেরই ধৈর্য্য থাকছে না। মুখ্যমন্ত্রী তাঁরই হওয়া উচিত, যাঁকে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক মানবেন।