বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া। — ফাইল চিত্র।
প্রথমটিতে ছিলেন না। তবে দ্বিতীয়টিতে নাম রয়েছে বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার। রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনের আগে দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল বিজেপি। তাতেই রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী-সহ তাঁর অনুগামীদের নাম। নিজের শক্ত ঘাঁটি ঝালরাপতন থেকেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন বসুন্ধরা। মনে করা হচ্ছে, অন্তর্দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে বসুন্ধরার জনপ্রিয়তাকেই আপাতত আসন্ন নির্বাচনে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি।
২৫ নভেম্বর রাজস্থানের ২০০টি বিধানসভা আসনেই ভোট। শাসক কংগ্রেস থেকে বিরোধী বিজেপি, সব দলই জোর প্রচারে নেমেছে। তবে বিজেপির প্রচারে সে ভাবে দেখা যায়নি বসুন্ধরাকে। দলীয় সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের সঙ্গে সংঘাতের কারণে আড়ালে রয়েছেন বসুন্ধরা। ২০১৮ সালে রাজস্থান বিজেপির সভাপতি করা হয় গজেন্দ্রকে। শীর্ষনেতৃত্বের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন বসুন্ধরা। তিনি জানিয়েছিলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে জাটদের সঙ্গে দলের দূরত্ব বাড়বে। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে। তার পরেই গজেন্দ্রের সঙ্গে বসুন্ধরার কোন্দল প্রকাশ্যে আসে।
সেই সংঘাতের প্রভাব পড়েছে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারেও। এমনকি বিজেপির প্রথম প্রার্থী তালিকায় নাম নেই বসুন্ধরার। সেই নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করে শাসক দল কংগ্রেস। বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বকে হাতিয়াড় করে প্রচার শুরু করে তারা। তার পরেই নড়েচড়ে বসেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে কিছুটা ভারসাম্য আনার চেষ্টা করেছে বিজেপি। সেখানে বসুন্ধরার পাশাপাশি নাম রয়েছে তাঁর অনুগামীদের। শুধু যে ভারসাম্য আনতে বিজেপি এমনটা করেছে, তা মানতে চাইছেন না রাজনীতিকদের একাংশ। তাঁরা মনে করছেন, রাজস্থানে সব শ্রেণির মানুষের কাছে বসুন্ধরার জনপ্রিয়তা কাজে লাগাতে চাইছেন তাঁরা। শুক্রবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। ওই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
বসুন্ধরা মধ্যপ্রদেশের সিন্ধিয়া রাজপরিবারের মেয়ে। মা বিজয়ারাজে সিন্ধিয়া ছিলেন ভারতীয় জন সঙ্ঘ (পরে বিজেপি)-র নেত্রী। দাদা মাধবরাও সিন্ধিয়া কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতা ছিলেন। এ হেন পরিবারের মেয়ে বসুন্ধরাকেই এখন তরুপের তাস করতে চাইছে বিজেপি। প্রথম তালিকায় নাম না থাকলেও দ্বিতীয় তালিকায় নাম রয়েছে পাঁচ বারের বিধায়ক চিতরগড়ের নরপৎ সিংহ রাজভির। তিনি প্রবীণ নেতা ভৈরো সিংহ শেখাওয়াতের জামাই। নরপতের নাম বাদ যাওয়ার পর দলের কর্মীদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার পরেই সিদ্ধান্ত বদল।
২০১৮ সালে রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস পেয়েছিল ১০০টি আসন। বিজেপি ৭৩টি। বহুজন সমাজ পার্টির হাত ধরে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। তারা পেয়েছিল ছ’টি আসন।