প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে গোটা দেশে। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়াতে ভোটমুখী রাজ্যে ভার্চুয়াল জনসভা ও অনলাইন পদ্ধতিতে ভোট করা যায় কি না তা নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাইল উত্তরাখণ্ড হাই কোর্ট। এ দিকে আজ আর এক ভোটমুখী রাজ্য মণিপুরের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন। সেখানেও করোনা সংক্রমণের আবহে ভোট করা নিয়ে আশঙ্কা জানায় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
তৃতীয় ঢেউয়ের প্রেক্ষিতে উত্তরাখণ্ডে ভোট স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়েছে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই মামলার শুনানিতে আজ কমিশনের কাছে অনলাইনে ভোট করা যায় কিনা তা জানতে চায় হাই কোর্ট। ওই মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ জানুয়ারি। যদিও সূত্রের মতে, তার আগেই ভোট ঘোষণা হয়ে যাবে পাঁচ রাজ্যে। সূত্রের মতে, নীতিগত ভাবে ভার্চুয়াল জনসভা করার অনুমতি দিতে সমস্যা নেই কমিশনের। গতকাল করোনা আবহে ভোট করাতে গিয়ে কী ভাবে ভিড় এড়ানো সম্ভব হতে পারে তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়। তাতে কোনও একটি রাজনৈতিক দলের অধিকাংশই জনসভাই ভার্চুয়াল পদ্ধিতেত করার প্রশ্নে নীতিগত ভাবে রাজি হয়েছেন কমিশন আধিকারিকেরা। তবে অনলাইন পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার প্রশ্নে কোনও পরিকাঠামো নেই তা স্বীকার করে নিয়েছে কমিশন।
এ দিকে মণিপুরে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কমিশন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে ভোট-পরবর্তী হিংসা, কালো টাকার ব্যবহারের সঙ্গেই কোভিড আবহে ভোট করানো কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অন্য দিকে কমিশনের পক্ষ থেকে মণিপুর প্রশাসনকে অবিলম্বে তাদের রাজ্যে টিকাকরণের হার বাড়াতে ফের নির্দেশ দিয়েছে। যে সমস্ত সরকারি কর্মী দু’টি টিকা নিয়েছেন তাঁদেরই একমাত্র ভোটের কাজে নামাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন করায় প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এ বারেও পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন হতে চলেছে। এখন পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার কোনও ইঙ্গিত দেয়নি কমিশন। বরং সময়মতো নির্বাচন করানোর পক্ষপাতী তারা। পাঁচ রাজ্যের মধ্যে শেষ রাজ্য হিসাবে কেবল মণিপুরের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কমিশন কর্তাদের আলোচনা বাকি ছিল। আজ সেই বৈঠক হওয়া জল্পনা ছড়ায় যে কমিশন আগামিকাল ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিতে পারে। যদিও কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে রাত পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। কমিশনের অন্য একটি সূত্রের খবর, আগামী মঙ্গলবার ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হতে পারে।
আগামী এক–দেড় মাসের মধ্যে দেশে ওমিক্রন সংক্রমণ দ্বিতীয় ঢেউকেও ছাপিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সেই সময়ে নির্বাচনী জনসভা, প্রচার, ভোটের প্রস্তুতি, ভোটদান ও গণনা— জনতার উপস্থিতিতে সংক্রমণকে আরও ইন্ধন দেবে সে বিষয়ে নিশ্চিত সব পক্ষই। কার্যত ভোটের পরে পাঁচ রাজ্যে হাতের বাইরে চলে যেতে পারে সংক্রমণ পরিস্থিতি। যার প্রভাব পড়তে পারে গোটা দেশে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে কেন ভোট পিছিয়ে দিচ্ছে না কমিশন।