প্রতীকী ছবি।
শেষ মুহূর্তে মেরুকরণের রাজনীতিতে ভরসা করে আগামিকাল পুষ্কর সিংহ ধামীর নেতৃত্বে উত্তরাখণ্ডের লড়াইয়ে নামছে বিজেপি।
উত্তরাখণ্ডের ৭০টি আসনে কাল ভোট। ২০০০ সালে রাজ্য স্থাপনের পর থেকে বিজেপি ও কংগ্রেসের দ্বিমুখী লড়াইয়ের সাক্ষী থেকেছে দেবভূমি। রাজনীতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ বার জেতা-হারা অনেকাংশে নির্ভর করছে এই রাজ্যের লড়াইয়ে প্রথম বার নামা আম আদমি পার্টি (আপ) অথবা বিএসপি কেমন ভোট কুড়িয়ে নেয়, তার উপরে। পাঁচ বছর আগের ভোটে উত্তরাখণ্ডে ৪৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। তার ভিত্তিতে ৭০টির মধ্যে ৫৬টি আসন জিতে নেয় তারা। তুলনায় ৩৪ শতাংশ ভোট পেলেও মাত্র ১১টি আসন জিততে সক্ষম হয় কংগ্রেস। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মায়াবতীর দল বিএসপি ২০১২ সালে এখানে পেয়েছিল ৩২ শতাংশ ভোট। পাঁচ বছর আগেকার ভোটে তা নেমে আসে মাত্র ২০ শতাংশে। ফলে একাধিক আসনে বিজেপি প্রার্থীরা ৫০ শতাংশের বেশি ভোট কুড়িয়ে নেন। তা ছাড়া, গত বারের নির্বাচনে বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিয়েছিল রাজ্যের ওবিসি সম্প্রদায়। কংগ্রেসের মতে, পাঁচ বছরে বিজেপিকে নিয়ে ওবিসি সম্প্রদায়ের মোহ ভেঙে গিয়েছে। তাই ওবিসি সমাজের ভোট ফের তাদের ঝুলিতে ফিরে আসতে চলেছে বলে কংগ্রেসের আশা।
এ বারের ভোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি। বিশেষ করে দিল্লির ধাঁচে উত্তরাখণ্ডবাসীকে বিনামূল্যে ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ, প্রতিটি পরিবারের মহিলাদের এক হাজার টাকা মাসিক সাহায্য, তরুণদের চাকরির প্রতিশ্রুতি, তার আগে পর্যন্ত পাঁচ হাজার টাকা সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেজরীওয়াল। রাজ্যের মানুষকে তাঁর আর্জি, ‘‘এক বার বিশ্বাস করে দেখুন।’’ রাজনীতির অনেকের মতে, উত্তরাখণ্ডের মানুষদের একাংশের মধ্যে বিজেপি-বিরোধী হাওয়া রয়েছে। কেজরীওয়ালের দল সেই অর্থে যদি বিরোধী ভোট কাটতে পারে, তা হলে বিজেপির সুবিধে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে শেষ বেলায় কংগ্রেসের মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পাল্টা জবাবে মেরুকরণের তাস খেলতে রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা বিজেপির দীর্ঘ দিনের প্রতিশ্রুতি। ভোটে জিতে এলে প্রথমে উত্তরাখণ্ডে তা চালু করে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে জল মেপে নিতে পারবেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিশেষ করে হিন্দু সমাজের মধ্যে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে কি না, তা দেখে নিতে পারবেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা।
আগামিকাল গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলির মধ্যে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ধামীর আসন খাতিমা। তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের হরিশ রাওয়ত লড়ছেন লালকূঁয়া থেকে। হরিশের মেয়ে অনুপমা রাওয়ত দাঁড়িয়েছেন হরিদ্বার (গ্রামীণ) আসনে। বিপক্ষে রয়েছেন গত মন্ত্রিসভার মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা জ্যোতিশ্বরানন্দ। এ ছাড়া বিজেপি প্রার্থী সতপাল মহারাজ লড়ছেন চৌবটখাল আসনে।