সুদীক্ষা ভাটি। ফাইল চিত্র
এক কৃতী ছাত্রীর মৃত্যুকে ঘিরে নতুন বিতর্ক উত্তরপ্রদেশে। গত কাল বুলন্দশহর জেলায় পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ২০ বছর বয়সি ছাত্রী সুদীক্ষা ভাটি। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, বাইক আরোহী দুই যুবক তাঁকে তাড়া করার ফলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। জেলা প্রশাসন অবশ্য দাবি করেছে, হেনস্থার কোনও প্রমাণ তাদের সামনে নেই। যদিও সিসিটিভি ফুটেজে দুই যুবককে দেখা গিয়েছে।
২০১৮ সালে সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে কলা বিভাগে জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন সুদীক্ষা। পরে স্কলারশিপ পেয়ে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসের ব্যাবসন কলেজে পড়তে যান তিনি। করোনা পরিস্থিতিতে জুন মাসে আমেরিকা থেকে ফিরে আসেন ওই ছাত্রী। এই অগস্টেই তাঁর ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।
সুদীক্ষার পরিবারের দাবি, বুলন্দশহরের একটি স্কুলে কিছু কাগজপত্র জোগাড়ের জন্য গত কাল তাঁর কাকা ও তুতো ভাইয়ের সঙ্গে গৌতম বুদ্ধ নগর থেকে বাইকে করে যাচ্ছিলেন সুদীক্ষা। সেই সময়ে রাস্তায় দুই যুবক তাঁর উদ্দেশে কটূক্তি করতে থাকে। তীব্র গতিতে বাইক চালাচ্ছিল তারা। বারবার ফিরেও আসছিল। ওই ছাত্রীর কাকা সত্যেন্দ্র ভাটি বলেন, ‘‘এক সময়ে বাইক আরোহী যুবকেরা স্টান্ট দেখাতে শুরু করে। আমি আমাদের বাইকের গতি কমিয়ে দিই। কিন্তু ওদের বাইক আমাদের বাইকে এসে ধাক্কা মারে। সবাই মাটিতে পড়ে যায়। সুদীক্ষার মাথায় আঘাত লেগেছিল।’’ সত্যেন্দ্র জানান, দুর্ঘটনার পরেই বাইক আরোহী দুই যুবক পালিয়ে যায়।
জেলা শাসক রবীন্দ্র কুমার অবশ্য দাবি করেছেন, হেনস্থার কোনও প্রমাণ তাঁদের কাছে নেই। উল্টে তাঁর দাবি, সুদীক্ষার কাকা নন, ছাত্রীর নাবালক ভাই বাইক চালাচ্ছিল। জেলাশাসক জানান, সুদীক্ষার কাকা দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলেন না। ওই ছাত্রীর পরিবার প্রশাসনের এই দাবি খারিজ করে দিয়েছে। বুলন্দশহরের পুলিশেরও বক্তব্য, প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের জানিয়েছেন, যানজটের কারণেই একটি বাইক আচমকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েছিল। তার ফলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ছাত্রীর মৃত্যুতে হেনস্থার অভিযোগ ওঠায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন অনেকেই। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা টুইট করে অভিযোগ করেছেন, ছাত্রীকে হেনস্থার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না প্রশাসন। বুলন্দশহরের ঘটনা মহিলাদের মনে নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে দিচ্ছে বলেই দাবি করেছেন তিনি। বিএসপি নেত্রী মায়াবতী টুইটারে লিখেছেন, ‘‘হেনস্থার কারণে বুলন্দশহরে কৃতী ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। কাকার সঙ্গে বাইকে করে যাচ্ছিলেন তিনি। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক আর লজ্জার ঘটনা। এর পরে মেয়েরা এগোবে কী ভাবে?’’ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি তুলেছেন মায়াবতী।
বিতর্কের মধ্যে শেষ পর্যন্ত এই ঘটনার তদন্ত বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিটের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।