গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বিতর্কের আবহেই কাঁওয়ার যাত্রার পথের ধারে দোকানদারদের নাম এবং পরিচয় লেখার নির্দেশ নিয়ে এ বার মুখ খুললেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘কাঁওয়ার যাত্রীদের যাত্রাপথের দু’পাশের যে সব খাবারের দোকান রয়েছে, তার মালিকদের বাধ্যতামূলক ভাবে দোকানের বোর্ডে নিজেদের নাম লিখে রাখতে হবে।’’
আগামী ২২ জুলাই কাঁওয়ার যাত্রা শুরু হচ্ছে। তার আগেই পুণ্যার্থীদের যাত্রাপথের সমস্ত দোকানদারকে এই নির্দেশ পালন করতে হবে বলে জানিয়েছেন যোগী। কেন এমন নির্দেশ? যোগীর ব্যাখ্যা, ‘‘কাঁওয়ার তীর্থযাত্রীদের পবিত্রতা রক্ষার উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত।’’ ঘটনাচক্রে, বিজেপি শাসিত পড়শি রাজ্য উত্তরাখণ্ডেও শুক্রবার একই নির্দেশ জারি করেছে পুলিশ।
শুক্রবারই উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী কপিলদেব আগরওয়াল জানান, দোকানদারদের একাংশ নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে কাঁওয়ার যাত্রীদের কাছে নিরামিষ খাবার বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উত্তরাকণ্ডের হরিদ্বার পুলিশের একটি সূত্র উদ্ধৃত করে শুক্রবার প্রকাশিত একটি খবরেও এমন ‘অভিযোগ’ তোলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কাঁওয়ার যাত্রার পথে যে সমস্ত খাবারের দোকান রয়েছে, তার মালিকদের নাম বোর্ডে লিখে রাখার জন্য সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছিল মুজফ্ফরনগর জেলা পুলিশ। পুণ্যার্থীদের যাতে সংশ্লিষ্ট হোটেল বা ধাবা নিয়ে কোনও সংশয় না থাকে, তার জন্যই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন সেখানকার পুলিশ সুপার। তিনি জানান, রাস্তায় খাবারের অস্থায়ী স্টলগুলিকেও ওই নির্দেশিকা মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। এর আগে পুণ্যার্থীদের সম্মান জানিয়ে কাঁওয়ার যাত্রাপথে আমিষ বিক্রি বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশের দাবি, পুণ্যার্থীদের খাবার নিয়ে অভিযোগ এড়ানো এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। একই নির্দেশ দেওয়া হয় সহারণপুরেও। বিরোধী শিবিরের একাংশ ওই নির্দেশের সঙ্গে প্রায় ন’দশক আগের নাৎসি জার্মানিতে প্রশাসনের ইহুদি-বিরোধী নির্দেশের তুলনা টেনেছেন। তাদের অভিযোগ, নাম প্রকাশের মাধ্যমে খাবারের দোকানের মালিক ও কর্মীদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ্যে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যেই এই নির্দেশ। যোগীর মন্ত্রী কপিলের বক্তব্যে সেই ইঙ্গিতই মিলেছে।