কেন আত্মঘাতী হলেন সম্ভব অগ্নিহোত্রী, বিষয়টি স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত।
ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন এক যুবক, তাঁর কাছেই বসে রয়েছে পোষ্য একটি কুকুর। সমানে ডেকে চলেছিল সে। এক বার যুবকের দিকে তাকাচ্ছিল, আর এক বার বাইরের দিকে। আর ক্রমাগত ডাকছিল। যুবকের পা ধরে টেনে নামানোর চেষ্টা করছিল। বাড়িতে ঢুকে এই দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছিলেন এক পড়শি।
পুত্রকে বার বার ফোন করেও যখন তিনি ফোন ধরেননি, উদ্বিগ্ন হয়ে ওই পড়শিকে ফোন করেছিলেন আনন্দ অগ্নিহোত্রী। ওই পড়শিকে তিনি বলেন, “ছেলে সম্ভব ফোন ধরছে না কেন, একটু খোঁজ নিন।” আনন্দের কাছ থেকে ফোন পেয়ে ওই পড়শি তাঁদের বাড়িতে যান। বাড়ির কাছাকাছি যেতেই তিনি শুনতে পান, আনন্দদের পোষ্য কুকুর অ্যালেক্স তারস্বরে চিৎকার করছে।
ওই পড়শি বাড়িতে ঢুকে দেখেন ঘরের দরজা হাট করে খোলা। সিলিং ফ্যানে ঝুলছেন সম্ভব। আর অ্যালেক্স তাঁর পা ধরে টেনে নামানোর চেষ্টা করছে। পড়শি ওই ঘরে ঢুকতে গেলেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে অ্যালেক্স। ভয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান ওই পড়শি। এর পর পাড়ার লোকেদের খবর দেন তিনি। খবর দেওয়া হয়ে পুলিশেও। সম্ভবের মা-বাবাকেও বিষয়টি জানানো হয়।
পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করতে গেলে কুকুরের বাধার মুখে পড়ে। সম্ভবের দেহের পাশ থেকে কিছুতেই সরানো যাচ্ছিল না অ্যালেক্সকে। এক পুলিশকর্মী সম্ভবের দিকে এগিয়ে গেলে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কুকুরটি। ফলে পুলিশকর্মীরা সেখান থেকে সরে যান। এর পরই খবর দেওয়া পুরনিগমকে। কুকুর ধরার জন্য বিশেষ একটি দল আসে পুরনিগম থেকে। অ্যালেক্সকে জালে ফাঁসিয়ে ধরা হয়। আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে ঘুম পাড়ানোর ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। কিন্তু শেষমেশ অ্যালেক্সরও মৃত্যু হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ইঞ্জেকশনের ডোজ় বেশি হওয়ায় অ্যালেক্সের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির।
ঝাঁসির অভিজাত এলাকায় বাবা-মা এবং এক পোষ্যের সঙ্গে থাকতেন বছর তেইশের সম্ভব অগ্নিহোত্রী। তাঁর বাবা আনন্দ অগ্নিহোত্রী রেলের এক শীর্ষ কর্তা। সম্ভব ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁর মায়ের শরীর ভাল না থাকায় তাঁকে নিয়ে মধ্যপ্রদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন আনন্দ। বাড়িতে পোষ্য অ্যালেক্সের সঙ্গে ছিলেন সম্ভব। তখনই এই ঘটনা ঘটে। কিন্তু কী কারণে সম্ভব আত্মঘাতী হলেন তা স্পষ্ট নয়।