— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কল খুললেই অনবরত জলের ধারা! স্বাধীনতার পর ৭৬ বছর কেটে গেলেও উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের গ্রামের বাসিন্দারা তা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। জলের জন্য স্থানীয়দের ভরসা ছিল ঝরনা বা কুয়োর জলে। ২০২৩ সালের আগস্টে প্রথম বার লাহুরিয়া দহ গ্রামে কলের জল আসে। তখন জেলাশাসক ছিলেন দিব্যা মিত্তল। তিনি কল ঘুরিয়ে তার উদ্বোধন করেছিলেন।
পাহাড়ের উপর সুদৃশ গ্রাম লাহুরিয়া দহ। মির্জাপুর সদর থেকে দূরত্ব ৪৯ কিলোমিটার। মাত্র ১,২০০ জন বাস করেন সেখানে। আগের ৭৬ বছর কাছের ঝরনার জলই ব্যবহার করতেন তারা। গরমে জল শুকিয়ে যেত। তখন জলের ট্যাঙ্কার কিনতেন স্থানীয়েরা। গ্রামের বাসিন্দা কুশলেন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘আগে আয়ের বড় অংশ জল কিনতে খরচ হত। ১০ বছর আগেও এখানে জল আনার ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু পরিকল্পনার অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। জল জীবন প্রকল্পের অন্তর্গতও ছিল না এই গ্রাম।’’ কুশলেন্দ্র আরও জানিয়েছেন, স্বাধীনতার আগে এই গ্রামে গুটিকতক পরিবার বাস করত। পাশুপালন করত। ঝরনার জলেই তাদের চাহিদা মিটে যেত। ক্রমে জনসংখ্যা বেড়েছে। তাই জলের অভাব দেখা দিতে শুরু করেছিল।
গ্রামের আর এক বাসিন্দা জীবনলাল যাদব জানিয়েছেন, সমতলে দুধ বিক্রি করতে যেতেন তিনি। তখন সেখান থেকে পাত্রে ভরে জল নিয়ে আসতেন। গত ২০-২৫ বছর ধরে জলের ট্যাঙ্কার আসত গ্রামে। সেখান থেকে জল কিনতে অনেক খরচ হত তাঁদের। জল নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হত বাসিন্দাদের মধ্যে। জীবনলাল জানিয়েছেন, আগের প্রকল্পতে খরচ হয়েছিল চার কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা। কিন্তু জল আসেনি। এর পর জেলাশাসকের কাছে আবেদন করেন তাঁরা। তিনি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পরিকল্পনা পাশ করান। ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেন্দ্রের জলজীবন প্রকল্পের বিশেষজ্ঞেরা গ্রামে এসে পরিদর্শন করেন। পরিকল্পনা পাশ করে সরকার। এর পরেই শুরু হয় কাজ। ২০২৩ সালের ৩১ অগস্ট জল আসে গ্রামে। জলজীবন প্রকল্পের আওতায় পরিচালনা করা হয় সরবরাহের কাজ।