শ্রদ্ধা ওয়ালকরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে যখন গোটা দেশ তোলপাড়, ঠিক সেই সময় উত্তরপ্রদেশের এক গ্রামে ক্ষেতের মধ্যে মহিলার কাটা হাত-পা উদ্ধার হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ফাঁকা ক্ষেতে মহিলার দেহাংশ দেখে চমকে উঠেছিলেন গ্রামবাসীরা। পুলিশে খবর দেন তাঁরাই। গত ৮ নভেম্বর ওই কাটা হাত-পা উদ্ধার হয় গুলেরিয়া গ্রামে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানার চেষ্টা করে কোনও থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েছে কি না। কিন্তু তেমন কোনও তথ্য না পাওয়ায়, কাটা হাত-পা কার, তা নিয়েই তদন্ত আরও জোরদার করেছিল পুলিশ। কয়েক দিন পরেই এক মহিলার ক্ষতবিক্ষত মাথা উদ্ধার হয়। সেই মুখের ছবি আঁকিয়ে তা বরাবাঁকি, সীতাপুর, হরদোই, রায়বরেলী, লখনউ, সুলতানপুর-সহ একাধিক জেলায় পাঠায় রামপুর কালান থানার পুলিশ।
সেই ছবি জেলাগুলির নানা প্রান্তে পৌঁছতেই, বরাবাঁকি থেকে এক মহিলা দাবি করেন, ছবিটি তাঁর মেয়ের। বয়স ৩৮। নাম জ্যোতি। শহরে বছর দশেক ধরে স্বামীর সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। তবে তাঁর নিখোঁজ হওয়ার খবর জ্যোতির মা জানতেন না বলে দাবি করেছেন পুলিশের কাছে।
জ্যোতির মায়ের কথার সূত্র ধরেই পঙ্কজ নামে এক ব্যক্তির খোঁজ পায় পুলিশ। তবে তিনি ১৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পঙ্কজের খোঁজে তল্লাশিতে নামে পুলিশ। কয়েক দিন পর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পঙ্কজের নাগাল পায় তারা। পঙ্কজকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু তিনি বার বারই পুলিশের কাছে দাবি করছিলেন যে, স্ত্রীর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না। কিন্তু পুলিশ তাঁকে চেপে ধরতেই খুনের কথা স্বীকার করেন পঙ্কজ।
এর পরই পঙ্কজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় পঙ্কজের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্ত্রীকে গলা টিপে খুন করার পর তাঁর দেহ টুকরো করে অন্য জায়গায় গিয়ে ক্ষেতের মধ্যে ফেলে দিয়ে এসেছিলেন। স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করতেন পঙ্কজ। আর সেই সন্দেহবশেই খুন করেছেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন পঙ্কজ। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, এক বন্ধুর সহযোগিতায় স্ত্রীর টুকরো করা দেহ অন্যত্র ফেলে এসেছিলেন পঙ্কজ। ওই বন্ধুর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।