সঞ্জয় গান্ধী হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত।
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠার পরই অমেঠীর সঞ্জয় গান্ধী হাসপাতালের লাইসেন্স কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। গত ১৪ সেপ্টেম্বর দিব্যা শুক্ল নামে এক মহিলার মৃত্যু হয় এই হাসপাতালে। অভিযোগ ওঠে, অ্যানাস্থেশিয়ার অতিরিক্ত ডোজ় দেওয়ার ফলে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সঞ্জয় গান্ধী হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতিও সরগরম হয়ে ওঠে।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগের খবর পৌঁছয় রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠকের কাছে। তিনি তৎক্ষণাৎ এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমও) চিকিৎসক অংশুমান সিংহকে। পাশাপাশি, এই ঘটনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথাও বলেছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশ পেয়েই সিএমও তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটির সদস্যরা হাসপাতালে গিয়ে তদন্তও করেন। তার পর সিএমও-র হাতে সেই রিপোর্ট তুল দেন। সেই রিপোর্ট পেয়েই বুধবার সিএমও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এই ঘটনার জন্য নোটিস দিয়ে জবাব চেয়ে পাঠান। সেই নোটিসে বলা হয়, কেন এই ঘটনা ঘটল, কোথায় ভুলচুক হল ইত্যাদি জানিয়ে তিন মাসের মধ্যে জবাব দিতে হবে।
কিন্তু সেই নোটিস পাঠানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সাঞ্জয় গান্ধী হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হয়। ফলে ওপিডি এবং অন্যান্য বিভাগের পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোনও রোগীর প্রাণ কেড়ে নিলে সেই হাসপাতালকে ছাড়া হবে না। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অল্পবয়সি এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত করেছে কমিটি। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরই হাসপাতালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাজ্যের যে কোনও হাসপাতালে এই ধরনের ঘটলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” এই ঘটনায় হাসপাতালের চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
সঞ্জয় গান্ধী হাসপাতাল বন্ধ করার বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস। হাসপাতালের পরিষেবা চালু করার জন্য জেলাশাসকের মাধ্যমে তারা রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।কংগ্রেসের অভিযোগ, পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, হাসপাতাল চালু না করলে আন্দোলনে নামবে তারা। ১৯৮৬ সাল থেকে এই হাসপাতাল চালু। অমেঠীর একমাত্র হাসপাতাল যেখানে ৩৫০টি শয্যা রয়েছে। ৪০০ কর্মী এই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত।